খবর ৭১: অবকাঠামো নির্মাণ কাজ লকডাউনের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং শতভাগ মাস্ক পরিধান করে এ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশ দেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি। নিজের সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত ওবায়দুল কাদের।
সামনে বর্ষাকাল, তাই বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই নির্মাণাধীন কাজ এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘বর্ষার আগে কাজ করার এখনই উপযুক্ত সময়। ১৪ তারিখ থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে সড়কে গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় রাস্তা ফাঁকা থাকবে, তাই এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করে যান চলাচলের উপযোগী করতে হবে।’
সামনে যেসব প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে, শুকনো মৌসুম এলেই যেন সেসব নির্মাণ কাজ শুরু করা যায় তার পেপার ওয়ার্ক এখনই শেষ করার নির্দেশনাও দেন ওবায়দুল কাদের। বিগত কয়েক বছরে সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে এবং হচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এসব কাজ আরও এগিয়ে নিতে হবে।’
ঢাকা-কক্সবাজার সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন। ওবায়দুল কাদের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি বিষয়ে বলেন, ‘এই প্রকল্প সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি, তাই এই প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও সম্প্রতি গতি পেয়েছে।’ প্রকল্প বাস্তবায়নকালে বা কাজ শুরু হওয়ার আগে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা সরকার রাজনৈতিক নিপীড়নে বিশ্বাসী নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার সকল দল ও মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।’ সরকার নাকি বিএনপি নেতাকর্মীদের হেফাজতের মামলায় জড়িয়ে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করছে- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের এ অভিযোগ গতানুগতিক এবং সত্য নয়। হেফাজতে ইসলাম দেশব্যাপী যে তাণ্ডব চালিয়েছে এবং জনগণ তথা রাষ্ট্রীয় সম্পদে আগুন দিয়েছে তা নিয়ে বিএনপি একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি।’
হেফাজতের তাণ্ডবলীলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অপরাধী কোনো দলের হতে পারে না, ধর্ম কখনও সহিংসতা উস্কে দেয় না। যারা ধর্মের নামে স্বার্থ হাসিলের নোংরা রাজনীতি করছে এবং সম্পদ নষ্ট করছে তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ধরা হচ্ছে।’
সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়ে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে এমন অভিযোগ সত্যের অপলাপ বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘মামলায় আসামি এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া নেতাকর্মীদের কোথায় হয়রানি করা হচ্ছে তার তালিকা দিন। ঢালাও অভিযোগ না করে স্পট প্রামাণ দিন।’
বিএনপিকে নাকি সরকার রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে তাদের কর্মীদের দমন করছে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির এই অভিযোগ বিষয়ে বলেন, ‘তাদের এসব কথা শুনলে জনগণ হাসে। তারা অপরাজনীতি ও মিথ্যাচারকে রাজনীতি মনে করছে। জনগণের কল্যাণ থেকে দুরে থেকে বিএনপি এখন সন্ত্রাস ও গুজব নির্ভর রাজনীতির চর্চা করছে।’ তিনি বিএনপিকে সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের পথ থেকে ফিরে জনকল্যাণমুখী ও ইতিবাচক রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে তাই দেশের মানুষের সুরক্ষা তথা সংক্রমণ রোধে শেখ হাসিনা সরকার যে সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের জীবনের সুরক্ষার স্বার্থেই।’ এ সময় বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি জনগণের জন্য, করোনা দল চেনে না, সবাই এই ভাইরাসের শিকার হতে পারে সুতরাং করোনা নিয়ে রাজনীতি না করে সরকারকে প্রয়োজনে গঠনমূলক পরামর্শ দিন।’
মহামারি থেকে উত্তরণে সবাইকে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং স্রষ্টার অপার কৃপায় নিশ্চয়ই আমরা সবাই এ সংকট কাটিয়ে উঠবো ইনশাআল্লাহ।’