রাব্বুল ইসলাম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নে অবস্হিত সিরিসকাঠ খাল। স্হানীয়রা অনেকে এটাকে ব্যাঙ নদী ও বলে থাকেন। গত ২০/৩/২০২১ ইং তারিখ সকালে স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরার জন্য জাল নামালে জালে উঠে আসে বিরল প্রজাতির এই মাছ। উৎসুখ জনতা মাছটি দেখতে স্হানীয় বটতলা বাজারে ভীড় জমায়।কৌতুহলী হয়ে উঠে মানুষজন জানার জন্য যে এটা মাছ না অন্য কিছু। কারন মুক্ত জলাশয়ে বা পুকুর খালে বিলে আমাদের দেশে এই মাছ দেখা যায়না বললেই চলে। এই মাছের প্রকৃত নাম হচ্ছে সাকার মাউথ ক্যাট ফিশ। এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস। মুখের অাকারে জলহস্তীর সাথে মিল থাকায় এই নাম করন করা হয়েছে। বাংলাদেশের মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে নব্বয়ের দশকে ব্রাজিল থেকে সাকার ফিশ প্রথম বাংলাদেশে আমদানি করা হয়। তখন এটি আমদানি করা হয়েছিল অ্যাকোয়ারিয়ামে রেখে ঘরে বা অফিসের ভিতরে রেখে শোভাবর্ধনকারী মাছ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য। এরপর দেশের স্হানীয় অ্যাকুয়ারিয়াম ব্যবসায়িদের হাতেই প্রাথমিকভাবে এই মাছের চাষ শুরু হয়। কিন্তু অ্যকুয়ারিয়ামের মাছ কিভাবে উন্মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ল এব্যাপারে এদেশে কোন গবেষনা এখন পর্যন্ত নাই। তবে এসব ব্যবসায়িদের অসাবধানতা বশতই হয়তবা সাকার ফিশ উন্মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞগন মনে করেন। জলাশয়ের জলজ পোকামাকড় শ্যওলা ছোট মাছ এদের প্রধান খাদ্য। সাকার মাছ শিকারি মাছ নয়,মুখ দিয়ে শুষে ও চুষে একসাথে অনেক খাবার গিলে ফেলে।পিঠের উপরে ও দুইপাশে রয়েছে তিনটি বড় কাটার মত ধারালো পাখনা, মুখের মধ্য রয়েছে ধারাল দাঁত। এই মাছের অনেক গুলো প্রজাতি অাছে তবে বাংলাদেশে যেটি অাছে তা অাকারে বেশি বড় নয় ১৬ থেকে ১৮ ইঞ্চির মত লম্বা হয়।২০১১ সালের মৎস্য অাইন অনুযায়ী বিদেশী কোন মাছের কারনে দেশী প্রজাতির মাছের উৎপাদন ব্যহত হলে তা অাইনগতভাবে দন্ডনীয় অপরাধ।সে অনুযায়ী সাকার ফিশ চাষ করা দন্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর কোন দেশেই এই মাছ খাওয়ার জন্য প্রসিদ্ধ নয় বরং অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছ হিসাবেই পরিচিত। সাকার মাছের পাখনা ধারাল হওয়ায় দেশীয় প্রজাতির অন্যান্য মাছের সাথে লড়াই করার সময় দেশীয় মাছের শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয় পরে পচন ধরে মাছ মারা য়ায়। মুক্ত জলাশয়ে থাকা অন্যান্য মাছের সঙ্গে অাবাস এবং খাবারের যোগান নিয়ে যে তীব্র প্রতিযোগীতা হয় তাতে দেশী প্রজাতির মাছ টিকে থাকতে পারেনা। সেকারনে সাকার ফিশ চাষে বাংলাদেশের মৎস্য চাষীদের উৎসাহ দেওয়া হয়না।