খবর ৭১: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে জনগণের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিয়েশাদির অনুষ্ঠান না করা, জনসমাগম যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা, পর্যটনে না যাওয়া, অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি না করা এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে শোকপ্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।মহামারির মধ্যেও সংবিধানের নিয়ম রক্ষায় আজ বেলা ১১টায় শুরু হয় চলতি সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন। সাংসদেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অধিবেশনে যোগ দেন।
চলমান সংসদের সরকারদলীয় সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে ওই শোকপ্রস্তাব আনা হয়। পাশাপাশি দেশের বিশিষ্টজনদের মৃত্যুতেও সংসদে শোক প্রকাশ করা হয়। রেওয়াজ অনুযায়ী, চলমান সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুর পরের অধিবেশনের প্রথম বৈঠক শোক প্রকাশের পর মুলতবি করা হয়। মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজকের বৈঠকের অন্যান্য কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু আবার বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও কিছুদিন ধরে হঠাৎ দ্রুত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকে হয়তো মনে করছে, যেহেতু টিকা নিয়েছেন, আর কিছু হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানা বন্ধ হয়েছে। যত বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, যারা পর্যটনে গেছে, সেখানেও আক্রান্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রথমে যেভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ইতিমধ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছি।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ১৮ দফার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার ধীরে ধীরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার চেষ্টা করছে। সে জন্য জনগণের সহায়তা দরকার। সেই সঙ্গে সব সময় মাস্ক পরা, গরম পানির ভাপ নেওয়া ও নাকে শর্ষের তেল দেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
মাহমুদ উস সামাদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, এই সংসদের অনেক সদস্যকে হারাতে হয়েছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক। মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী একজন ভালো সংগঠক ছিলেন। তার মধ্যে মানুষের জন্য কাজ করার আগ্রহ ছিল। কয়েক দিন আগেও তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি সব সময় সক্রিয় ছিলেন। চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নিতে না নিতেই চলে গেলেন।
বিএনপির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওদুদ আহমদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী ছিলেন বলে লিখেছেন। আসলে তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কোনো অ্যাপয়েন্টেড আইনজীবী ছিলেন না। তিনি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঘুরতেন। বঙ্গবন্ধুর পিএসের সঙ্গে ঘুরতেন। বিশেষ করে ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওদুদ আহমদ অনেক লেখা মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখেছেন। রাজনীতিতে তার বারবার দলবদল করার অভ্যাস ছিল। তিনি ট্যালেন্টেড মানুষ ছিলেন। কিন্তু দেশপ্রেম কাজে লাগালে অনেক কিছু দিতে পারতেন।
অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ফারুক খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, পীর ফজলুর রহমান, আবদুস শহীদ, নুরুল ইসলাম, বিএনপির হারুনুর রশীদ প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।