খবর৭১ঃ জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ঢাকায় নামার পর সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান মোদি।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এ সময় শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এরপরে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন এবং পরিদর্শন বইয়ে সই করেন।
এর আগে সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে মোদির নেতৃ্ত্বে আসা ৭১ থেকে ৭২ সদস্যের ভারতের প্রতিনিধি দলটি বহনকারী বিশেষ বিমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
১০টা ৫৮ মিনিটে বিমান থেকে নামেন মোদি। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মোদিকে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
এ সময় বিমানবন্দরে মন্ত্রিসভার সদস্যরাসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেলা ১১টা ৯ মিনিটে বিমানবন্দর ছাড়েন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি।
বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে হেলিকপ্টারে করে সাভার স্মৃতিসৌধে পৌঁছান মোদি। স্মৃতিসৌধের কর্মসূচি শেষে আবার হেলিকপ্টারে ঢাকায় রওয়ানা দেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর গমন উপলক্ষে সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় নেয়া হয়েছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্মৃতিসৌধের ৩-৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। এর মধ্যে সব ধরনের যানের পাশাপাশি জনসাধারণের চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় আসলেও মোদির এই সফরে স্থান পাবে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী দেশ, প্রতিবেশী, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের কারণে দুই দেশের সম্পর্ক সুগভীর। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ দেশটির সরকার প্রধানের সফর উপলক্ষে নিরাপত্তার কঠোরতাসহ আয়োজনের কোন ত্রুটি রাখেনি বাংলাদেশ।
সাভারের শ্রদ্ধা জানানোর পর আজই ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন মোদি। এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন মোদি।
সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে সাতক্ষীরার সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা ঈশ্বরীপুর যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পূজা দিতে যাবেন নরেন্দ্র মোদি। যশোরেশ্বরী মন্দিরে পূজা দেয়ার পর সকাল ১০টার দিকে তিনি মন্দির ত্যাগ করবেন। এরপর তিনি হেলিকপ্টারে করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। সেখানে বঙ্গবন্ধুর সমাধি ও কাশিয়ানী উপজেলার মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সফরে তিনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। শনিবার রাতে বাংলাদেশ ত্যাগ করার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।