খবর৭১ঃ
মিয়ানমারে জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ থামাতে নির্বিচার গুলি, শারিরীক আক্রমণ এবং অপহরণ করছে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী। তাই পরিস্থিতি বুঝে বিক্ষোভের ধরন পাল্টাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের অভিনব ও নতুন বিক্ষোভ পরিকল্পনার সর্বশেষ সংযোজন ‘নীরব ধর্মঘট।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভের আরও পরিকল্পনা করেছেন। ‘নীরব ধর্মঘট’ অর্থাৎ ‘অল শাটডাউন’ করবেন তারা। ঘর থেকে বের হবেন না, কোনো ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়াবেন না, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখবেন। ইতোমধ্যে জনসাধারণকে তারা ঘরে থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন।
বুধবার একজন বিক্ষোভকারী জানান , ‘নো গোয়িং আউট, নো শপ, নো ওয়ার্কিং। অল শাটডাউন। জাস্ট ফর ওয়ান ডে’। অর্থাৎ গণতন্ত্রপন্থিদের বুধবারের নীরব বিক্ষোভ বাস্তবায়ন হবে ‘বাইরে বের না হয়ে, দোকানে না গিয়ে, কোনো কাজ না করে, সবকিছু বন্ধ রেখে, তবে সেটা একদিনের জন্য’
এদিকে, সেনাবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দেশটিতে অশান্তি সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার। গতকাল রাজধানী নেপিডোয় এক সংবাদ সম্মেলনে জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন সংবাদমাধ্যমকে ‘ফেইক নিউজ’ প্রচারের জন্য দোষারোপ করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে নিহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন জান্তার মুখপাত্র। তাদের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘তারাও এ দেশের নাগরিক। তিনি জানান, সহিংসতায় ১৬৪ জন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ করে জানান, তারা নিরাপত্তা বাহিনীর নয় সদস্যকে হত্যা করেছে।
তবে, দ্য অ্যাসিস্টেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) জানিয়েছে, দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে কমপক্ষে ২৬১ জন নিহত হয়েছেন।
গত ৪ নভেম্বর মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনে অং সান সু চি’র দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জয় পায়। গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর ওই নির্বাচনে জালিয়াতির কথা উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন সেনা সরকার। তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে নির্বাচন কমিশন। সামরিক নেতারা নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ ঘোষণা করেননি। দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হলেও প্রতিদিনই সেনাবিরোধী আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন।