স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট: সারা দেশে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় করেছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। যার ফলে এবারের চৈত্র পূর্নিমায় আর মেলা হচ্ছে না মাজার প্রাঙ্গনে বলে জানিয়েছেন খানজাহান (রহঃ) এর মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী। দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্যবাহী এই মেলা স্থগিত করায় হতাশা প্রকাশ করেছে মাজার ভক্ত ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এবছর ২৮, থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই মেলা হওয়ার কথা ছিল।
মাজার সংলগ্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ওবায়দুল ইসলাম বলেন, সারা বছরই মাজার কেন্দ্রিক আমরা শিশুদের খেলনা, মোববাতি, আগরবাতি, তাগিসহ বিভিন্ন বিভিন্ন খাদ্যপন্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। সারা বছরের ক্রয়-বিক্রয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে একধরণের পেটে ভাতে খেয়ে পড়ে বেচেঁ থাকি। সারা বছরই আমরা মেলার জন্য অপেক্ষা করি। কারণ চার দিনের এই মেলায় সারা দেশ থেকেই প্রচুর লোক আসেন। এই সময়ে আমাদের যে আয় হয় তা দিয়ে সন্তানের লেখা পড়ার খরচ ও কিছু স য়ও করি। কিন্তু এবছর মাত্র মেলা স্থগিত হওয়ায় আমাদের খুব ক্ষতি হয়ে গেল।
ব্যবসায়ী শেখ মোহাম্মাদ আলীসহ একাধিক ব্যবসায়ী জানান, মেলা উপলক্ষে আমরা ব্যবসায়ীরা লোন করে অনেক মালামাল ক্রয় করেছিলাম। হঠাৎ করে মেলা স্থগিত করায় আমরা চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। আমরা এখন কি করব, কিভাবে কিস্তি পরিশোধ করব বুধে উঠতে পারছি না। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলা বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
অন্যদিকে স্থানীয়রা বলেন, হঠাৎ করে এভাবে মেলা বন্ধ করার কোন যুক্তি নেই। বিভিন্ন এলাকায়তো মেলাসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশ চলমান রয়েছে। শুধু মাজার মেলা স্থগিত করে লাভ কি।
খানজাহান (রহ) এর মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, খানজাহান আলী (ওরহ) এর মাজারে সাড়ে ৫‘শ বছরের অধিক সময় ধরে প্রতিবছর চৈত্র মাসের পূর্নিমার সময় চারদিন ব্যাপি ধর্মীয় উৎসব, ওরজ, মিলাদ মাহফিল ও মেলার আয়োজন করে আসছি। এই মেলায় সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক দর্শনার্থীরা মেলায় আসেন। কিন্তু এবার করোনার কারণে মেলাটি আমরা করতে পারছি না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যথারীতি আবারও এখানে উৎসবের আয়োজন করা হবে। করোনা মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি। এই পরিস্তিতিতে ধর্মীয় সমাবেশ উপলক্ষে সারা দেশ থেকে যেসব ভক্তবৃন্দরা মাজারে এসে থাকেন তাদেরও আসতে নিরুৎসাহিত করেন তিনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হক বলেন, সম্প্রতি করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় চৈত্র পূর্নিমায় মাজার সংলগ্ন ধর্মীয় উৎসব ও মেলা হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী বছর আবারও ধর্মীয় উৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।