খবর৭১ঃ
শব্দদূষণ দেশ, কাল, স্থান ভেদে অন্য সমস্যার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সমস্যাটিও বড় করে তুলছে। যেমন একটানা গাড়ির শব্দ কিংবা উচ্চ শব্দের গান হৃদরোগের ঝুঁকি, শ্রবণশক্তি হ্রাস, মানসিক চাপ বাড়ানো ছাড়াও নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
গানের শব্দ
প্রতিটি মানুষ যেমন আলাদা, তেমনি তার কাছে শব্দের মাত্রার গ্রহণযোগ্যতাও ভিন্ন। উচ্চ শব্দের গান কারও কারও জন্য ভীষণ বিরক্তিকর। অন্যদিকে সেই গান খুব জোরে বাজালেও যথেষ্ট জোরে নয় বলেও কেউ কেউ মনে করেন। আসলে শব্দের মাত্রার ব্যাপারটি অনেকটাই ব্যক্তিগত পছন্দ বা ভালোলাগার ব্যাপার।
যানবাহনের শব্দ
যানবাহনের শব্দও কারো কাছে কষ্টের বা বিরক্তিকর, আবার কারও হয়ত তেমন খারাপ লাগে না। উন্নত দেশ জার্মানিতে গাড়ি চলার মৃদু শব্দ হলেও হর্ন শোনা যায় না বললেই চলে। তারপরও নাকি জার্মানিতে প্রতি তিন জনের দু’জনই এ দেশের ৪০ মিলিয়ন গাড়ির শব্দে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
শব্দের মাত্রা
জার্মানির খুব ব্যস্ত রাস্তার শব্দ মাত্রার স্তর ৭০ থেকে ৮০ ডেসিবল, আর ট্রাক চললে তা হয় গড়ে ৯০ ডেসিবেল। আর বিমান যাত্রা শুরু করার সময় শব্দের মাত্রা হয় সাধারণত ১২০ থেকে ১৩০ ডেসিবেল। বিশেষজ্ঞদের মতে, শব্দের এই মাত্রা মানুষের সহ্য ক্ষমতার মধ্যে।
কানের ক্ষতি
শব্দের মাত্রা ১২০ ডেসিবলের বেশি হলেই মানসিকভাবে অস্থির হতে পারে যে কেউ। কানের ক্ষতি বা শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে। তাছাড়া কানের দু’পাশের চুলের কোষগুলো নষ্ট হয়ে কানে কম শোনার ঝুঁকি বাড়ায়। আর ধীরে ধীরে শব্দ খুব ভালো করে বোঝার শক্তি কমিয়ে দেয়। তবে নিয়মিত হেডফোন ব্যবহারেও এমনটা হতে পারে।
টিনিটাস
নিয়মিত কানে জোরে জোরে শব্দ গেলে ‘টিনিটাস’ বা কানে ভো ভো শব্দ হয় এ রকম অসুখও হতে পারে। যারা নিয়মিত প্লেনে লম্বা ভ্রমণ করে থাকেন, তাদের ক্ষেত্রে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
হৃৎপিণ্ড
তীব্র শব্দ শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে দেয়। আর সেকারণেই হৃদরোগ, মাথা ঘোরার মতো অসুখের ঝুঁকিও বাড়ে। এবং রাতে যদি শব্দ ৫৫ ডেসিবলের বেশি হয়, তাহলে ঘুমের সমস্যা হয়। আর নিয়মিত এমনটা হলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
ডাক্তারের পরামর্শ
যাদের বড় রাস্তার পাশে বাড়ি, তারা যদি শব্দের কারণে রাতে ঘুমাতে না পারেন, তাদেরকে কানে তুলো বা শব্দ না শোনার জন্য বিশেষ ধরনের ইয়ার প্লাগ পাওয়া যায়, সেটা লাগিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কানের জন্য ‘অ্যাপ’
কান কতটা খারাপ বা কান সম্পূর্ণ সুস্থ কিনা তা জানতে চাইলে যে কেউ স্মার্ট ফোনের ‘মিমি’ অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপটি যে কেউ ডাউনলোড করে নিতে পারেন বিনা মূল্যে। স্বাস্থ্য বিষয়ক অ্যাপটি তৈরিতে সহায়তা করেছে জার্মানির স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানি বার্মার জিইকে।