মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ দুষণের কোন সীমানা নেই। পরিবেশকে দুষণের হাত থেকে বাঁচাতে হলে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর দিয়ে কোন কাজ হবে না। এ মুহুর্তে সরকারের উচিত দেশের পরিবেশ রক্ষায় কমিশন গঠন করা’। রবিবার আন্তজার্তিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ-এর আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তরা এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর ইকরামুল ওযাদুদের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র আতাউর রহমান সেলিম, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডঃ আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, বাপা’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, নির্বাহী সদস্য আব্দুল করিম কিম, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ছামির মাহমুদ।
বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনসুর উদ্দিন আহমদ ইকবাল, সাবেক সভাপতি শোয়েব চৌধুরী, অধ্যাপক নাসরিন হক, কবি মোস্তাফিজুর রহমান ও পরিবেশ কর্মী আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।নব-নির্বাচিত মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘হবিগঞ্জ শহরের পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব আমার। এজন্য জনগনের পাশপাশি রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরী। নির্বাচনের আগে পরিবেশ দুষণসহ নানা সমস্যা সমাধানের জন্য জনগনের কাছে ওয়াদা করেছি। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই শহরের বিভিন্ন পেশাজীবী ও সংসদ সদস্যকে নিয়ে আলেচনা সভায় বসবো।’ তিনি শহরের পুরাতন খোয়াই নদী, পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘সরকার ও রাজনৈতিক সহযোগিতা না পেলে কোন কাজই করা সম্ভব হবে না।স্টামফোর্ড ইউনির্ভাসিটির শিক্ষক প্রফেসর ডঃ আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘নদীকে জীবিত সত্বা বলা হয়, কিন্তু শিল্প থেকে ফেলা তরল বর্জ্যে নদীকে বাচাঁনো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এক শ্রেণীর লোভি শিল্পপতিরা খরচ বাঁচানোর জন্য ইটিপি চালান না। পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন আসার খবর পেয়ে তারা কয়েক ঘন্টা ইটিপি চালিয়ে দায় সারেন। আজকাল শিল্পপতিরা দুষিত পানি পাইপের মাধ্যমে মাটির নীচে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। যা আরো ভয়াবহ। কারণ নলকুপের মাধ্যমে তোলা ওই পানিই মানুষ পান করেন। ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে।বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ‘খোয়াই নদী পুনঃ উদ্ধার না হলে হবিগঞ্জবাসী বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবেন। তিনি ধারণা করছেন আগামী বর্ষাতেই শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিবে।’
তিনি নবনির্বাচিত মেয়রের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হবিগঞ্জের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় যদি পুরাতন খোয়াই নিয়ে কোন প্ল্যান করতে চান তা হলে বিনা খরচায় দেশ বরেণ্য পরিবেশবিদ, স্থপতিকে দিয়ে কাজ করে দেব। এর আগে মেয়রকে জনগনের কল্যানের জন্য নির্মোহভাবে নদী ও পুকুরের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে।স্থানীয় আরডি হল প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা ছাড়াও পানি প্রদর্শনী, নদীর ছবি আঁকা, হবিগঞ্জ ডিবেটিং সোসাইটির বিতর্ক, ছবি প্রদর্শনী, সংবাদ প্রদর্শনী, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, নদী নিয়ে গান, কবিতা, নাচসহ নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। গতকালের পুরো অনুষ্ঠাহনটি দেশ বরেণ্য সাংবাদিক, বাংলাদেশের নদী আন্দোলনের অগ্রদূত মরহুম সৈয়দ আবুল মকসুদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়।