খবর৭১ঃ
শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
রবিবার ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান কর্তৃক আসামিরা দোষী না নির্দোষ এমন প্রশ্নের জবাবে নির্দোষ দাবি করে বিচার চান তারা।
এদিন বিচারক আত্মপক্ষ শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপিত ৪৬ জন সাক্ষীর বক্তব্য আসামিদের পড়ে শোনান। তারপর বিচারক দোষী না নির্দোষ জানতে চান। আসামিরা নির্দোষ দাবি করার পর বিচারক জানতে চান তাদের পক্ষে সাফাই সাক্ষী দেবেন কি না? জবাবে আসামি জিয়ন, মুন্না ও রাসেল সাফাই সাক্ষী দেবেন বলে জানালে বিচারক আগামী ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ৪ মার্চ মামলাটিতে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত করেন।
মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামিরা হলেন, বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান ও এএসএম নাজমুস সাদাত, বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসাতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, শিক্ষার্থী আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শিক্ষার্থী শাসছুল আরেফিন রাফাত, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আকাশ হোসেন, শিক্ষার্থী মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, হোসেন মোহাম্মাদ তোহা, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু। যাদের মধ্যে প্রথম আটজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
অপর তিন আসামি বুয়েটের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মুহাম্মাদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান (২২), সিভিল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (২০) ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মুজতবা রাফিদ (২১) পলাতক রয়েছেন।
আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়। রাত ৩টার দিকে হল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে ওই বছর ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার পর ওই বছর ১৩ নভেম্বর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।