মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর থেকে: সৈয়দপুরে পাগলা কুকুরের সন্ধান চেয়ে গোটা শহরে মাইকিং করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গভীররাত পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে মাইক প্রচার চালানো হয়। এতে বলা হয়, গত ৭ মার্চ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অস্বাভাবিক আচরণ করা একটি কুকুর মানুষের শরীরে কামড় ও আঁচড় দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে শিশুসহ ১৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। পরে তাদেরকে ভ্যাকসিন প্রদানসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এঘটনার পর থেকে ওই কুকুরকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা। ওই প্রচারে কুকুরের সন্ধান বা খোঁজ পেয়ে থাকলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়। এছাড়া কুকুর বা বিড়াল কামড় দিলে অথবা আঁচড় দিলে সাথে সাথে আক্রান্তদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কুকুরের সন্ধানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমন মাইকিংয়ে গোটা শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ৭ মার্চ সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় একটি পাগলা কুকুর শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষজনকে আক্রমণ করেছে। এতে ওইদিন কয়েক ঘন্টার মধ্যে শিশুসহ আহত হয়েছে ২৫ জন । আহতদের সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও নীলফামারী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতরা হলো শহরের সাহেবপাড়ার কামাল হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম (১২) ও ইসমাইল (৭), মিস্ত্রীপাড়া এলাকার মুন্নার স্ত্রী শাবানা (৩২), রবিউল ইসলাম (৪০), গোলাহাট এলাকার মোস্তাফিজুর (৬৬), রোজি আক্তার (৩০), জাবির হাসান (৩০), ইবরার (৪৪),হায়দার আলী (৪০), কামাল হোসেন
(৪৭), রাজু (২৮)। এছাড়া অন্যান্য এলাকাতেও কুকুরের আক্রমণে আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর মিলেছে।
তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে অস্বাভাবিক আচরণ করা কুকুরের অতর্কিত আক্রমণে আহত হওয়ার ঘটনায় গোটা শহরে মানুষজনের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে লোকজন তাদের শিশু সন্তান নিয়ে রয়েছেন চরম টেনশনে। পাড়া মহল্লায় কুকুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মানুষজন হাতে লাঠিসোটা নিয়ে চলাচল করছে। কিন্তু পাগলা ওই কুকুরের সন্ধান পাচ্ছেনা তারা। আজ বুধবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় পাগলা কুকুরের সন্ধান করছে মানুষজন। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় হাজার হাজার কুকুরের অবস্থান। কিন্তু পৌর পরিষদ কুকুর নিধনে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় দিনের পর দিন কুকুরের অবাধ বিচরণ বাড়ছে। পৌরসভা যদি আগে থেকেই কোন ব্যবস্থা নিত তাহলে এমন পরিস্থিতি হতোনা। সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রবিউল ইসলাম কুকুরের কামড়ে মানুষজন আহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।তিনি সাংবাদিকদের জানান, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকায় নীলফামারী সদর হাসপাতালে আহতদের প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগসহ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বুধবার বিকেলে মুঠোফোনে কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আলেমুল বাশারের সাথে। তিনি মাইক প্রচারের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তাদের কাছে ১৩ জন আহত হওয়ার তথ্য রয়েছে। এছাড়া কুকুরের কামড়ে আক্রান্তরা যাতে দ্রুত ভ্যাকসিন নিতে পারেন সেজন্য তার দপ্তর সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।