ভাসানীকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস রচনা প্রতারনা : মোস্তফা

0
360

খবর ৭১: স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস রচনা জাতির সাথে প্রতারনা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, মওলানা ভাসানীই হচ্ছেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারনের মধ্য দিয়েই তিনি বাংলার মানুষের মনে স্বাধীনতার বিজ বপন করেছিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্য সেই মহান নেতাকে ৫০বছরের শাসকগোষ্টিরা যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে।

মঙ্গলবার (৯মার্চ) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে ‘৯ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এক দফা দাবী স্মরণে’ বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হঠাৎ এক ঘোষনার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হুট করে শুরু হয়নি। বাংলার জনগনকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের দিকে ধাবিত করতে মওলানা ভাসানীর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। মুক্তিযুদ্ধ ছিল এলটি দীর্ঘ ধারাবাহিক আন্দোলনের ফসল। বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষনের একদিন পর ৯মার্চ পল্টনের জনসভায় মজলুম জননেতা বজ্রকন্ঠে উচ্চারন করেন ‘সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে কেউ দাবীয়ে রাখতে পারবে না এবং এ ব্যপারে কোন আপোষ সম্ভব নয়’।

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ১৯৭১’র ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর ৯মার্চ মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর বক্তব্য সমগ্র জাতিকে সংগ্রামী ও বিপ্লবী আগুনে পুড়িয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে পৌঁছে দেয়, জাতির মাঝে রাষ্ট্রের অনিবার্যতা স্পষ্ট হয়, জাতির অন্তরে বিপুল শক্তির জন্ম দেয়

তিনি বলেন, ৯ মার্চ মওলানা ভাসানীর ভাষনের পর প্রধান দুই নেতা একসঙ্গে একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ঐকমত্য প্রকাশ করেন, তখন স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না। যদিও আজ ইতিহাস থেকে তা মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে অব্যাহতভাবে।

‘সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না’ এই কথাগুলো ছিল দূরদর্শী মওলানা ভাসানীর ৯ মার্চের ভাষনে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাত কোটি মানুষকে নিয়ে করা এই অবশ্যম্ভাবী ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল মাত্র নয় মাসের রক্তিক্ষয়ি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।

বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্ব্বায়কদ্বয় জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী ও এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব এহসানুল হক জসীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল করিম, নারীনেত্রী জেসমিন সুলতানা, কাজী শাহনাজ মিনু, আইরিন আক্তার দিবা, চিত্রা রানী দেবী প্রমুখ।

জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতা এবং সশ¯্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে যারা মওলানা ভাসানীকে বাদ দিতে চায় তারা নিজেরাই ইতিহাস থেকে বাদ পড়ে যাবেন। মনে রাখতে হবে কাউকে বাদ দেয়ার অপচেষ্টা কখনো শুভ ফল বয়ে আনবে না।

এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, জাতি হিসাবে আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। আর অর্জনে মওলানা ভাসানী জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হলে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না। নির্মোহভাবে ইতিহাস নির্মানে ব্যর্থ হলে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না।

স্বপন কুমার সাহা বলেন, কিছু মানুষ শুধু স্বপ্ন দেখাতে নয়, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আলোকবর্তিকা হয়ে থাকেন। মওলানা ভাসানী সেই মাপের একজন মানুষ ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন, দেখিয়েছেন এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে লড়াই করেছেন।

এহসানুল হক জসীম বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর অবদান সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক। শুধু দিবস কেন্দ্রিক স্মরণ না করে তার চেতনাকে লালন করে সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ি এই হোক প্রত্যয়।

মো. কামাল ভুইয়া বলেন, ইতিহাসের ধারাবাহিকতা ব্যাহত হলে ইতিহাস বিকৃতি হতে বাধ্য। মনে রাখতে হবে, মওলানা ভাসানীর ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস অসম্পূর্ণ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here