হবিগঞ্জে উপবৃত্তির টাকার নামে প্রতারণা

0
340

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জে সক্রিয় একটি অভিনব প্রতারকচক্র। চক্রটি উপবৃত্তির প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বিকাশ একাউন্টের ‘পিন কোড।’ এমন অভিযোগই করছেন অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়া একাধিক শিক্ষার্থী।জানা যায়, শনিবার (৬ মার্চ) বিকেলে শহরের পুরাণমুন্সেফী ও শ্যামলী এলাকার দুই কলেজ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অভিনব কায়দায় বিকাশ একাউন্টের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে একটি প্রতারকচক্র। পুরানমুন্সেফী এলাকার বাসিন্দা ও হবিগঞ্জ সরকারী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুস্মিতা দাস মুন অভিযোগ করে জানান, উল্লেখিত সময়ে ০১৬১০-৪৭৬৭২৬ নাম্বার থেকে তার পিতার মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোন প্রদানকারী নিজেকে শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা দাবী করে। এ সময় কথিত ওই কর্মকর্তা উপবৃত্তির টাকা প্রদানের জন্য কথোপকথন শুরু করে। একপর্যায়ে অভিনব কৌশলে সুষ্মিতার কাছ থেকে তার ও তার পিতার বিকাশ একাউন্টের ‘পিন কোড’ নাম্বার জেনে নেয়। কিন্তু, একাউন্টে টাকা না থাকায় প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পান তারা।এ ঘটনার কিছুক্ষন পর শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তারের মাতা স্বপ্না আক্তারের মোবাইলেও ওই নাম্বার থেকে ফোন করে ওই প্রতারকচক্র। কিন্তু স্বপ্না আক্তার ব্যস্ততার কারনে ফোন কেটে দিলে রক্ষা পান তিনিও।সুস্মিতার পিতা গোপী দাস অভিযোগ করে বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তুলছে। প্রতারকচক্র আমার ও আমার মেয়ের মোবাইল নাম্বার পেলো কোথায়? শুধু তাই নয়, আমার মেয়ের নাম, কলেজ, ক্লাস ও গ্রুপের নাম কি করে জানলো?’ একইরকম অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তারের মাতা স্বপ্না আক্তারও। তিনিও বলেন, ‘প্রতারকরা আমার মেয়ের নাম জানলো কি করে?’ সচেতনমহল মনে করেন, প্রতারকচক্রের কাছে বিকাশ গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য থাকার কথা নয়। চক্রটির সাথে সংশ্লিষ্ট কারো সম্পৃক্ততা আছে কি না? বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।এদিকে, প্রায় মাস খানেক পূর্বে বাহুবলের জাঙ্গালিয়া এলাকার ফাহাদ নামে এক যুবকের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা লাটারি বিজয়ীর প্রলোভন দেখিয়ে ০১৬০৯-৯৩৬৭৭০ ও ০১৭০৫-২০৮৫৯১ নাম্বারে ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় আরেকটি প্রতারকচক্র। এরকম একাধিক ঘটনার অনুসন্ধানকারী এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইলের সিমকার্ড রেজিষ্ট্রেশনকারী (বিক্রয়কারী) কতিপয় ব্যক্তিরাও ওই প্রতারকচক্রের সাথে জড়িত। তিনি জানান, কোন কোন ব্যক্তির সিমকার্ড রেজিষ্ট্রেশনের সময় আঙ্গুলের অতিরিক্ত একটি ছাপ ও এন.আই.ডি কার্ডের নাম্বার রেখে দেয় তারা। পরে ওই ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ ও এন.আই.ডি নাম্বার দিয়ে পৃথক আরেকটি সিম রেজিষ্ট্রেশন করে নেয় তারা। মূলত ওই সিম গুলোই পরবর্তিতে ব্যবহৃত হয় প্রতারণার কাজে। অনুসন্ধানে এমনও দেখা গেছে, প্রতারণায় ব্যবহৃত সিমকার্ডটি কোন এক ভিক্ষুকের নামে রেজিষ্ট্রেশন করা। ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এসব ক্ষেত্রে প্রকৃত প্রতারকচক্রকে সনাক্ত করা খুবই কঠিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here