খবর৭১ঃ
সরকার নতুন করে করোনাভাইরাসের আরও চার কোটি ডোজ টিকা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অতিরিক্ত এই চার কোটি ডোজ কেনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব।
এর আগে বাংলাদেশ ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে তিন কোটি ডোজ কেনার যে চুক্তি করেছে, তার ভিত্তিতে গত দুই মাসে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ লাখের বেশি মানুষ টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানুষের মাঝে এখন আগ্রহ যে হারে বাড়ছে, তাতে টিকার যোগানে ঘাটতি হলে চাহিদা সামলানো কঠিন হতে পারে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘যোগানটার ব্যাপারে আমরা একটু চিন্তিত তো আছিই। তবে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আমরা রাখছি। এখন পর্যন্ত হতাশ হওয়ার মতো কোনো কিছু আমরা পাইনি। তার মানে আমরা টিকা পাব।’
দেশে এখন করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার বয়সসীমা ৪০ বছর। এই বয়সসীমার মধ্যেই প্রায় চার কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই হিসাব দিচ্ছে। এছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলে থাকা শিক্ষকদের টিকা দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
কিন্তু এখন বাংলাদেশ সরকার বেসরকারি ঔষধ কোম্পানি বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার তিন কোটি ডোজ আনছে। তাতে একজনের দুই ডোজ করে দেড় কোটি মানুষকে টিকা দেয়া যাবে।
এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্সের এক কোটি নয় লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পাবে – যা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয় বলে বলা হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে আরও চার ডোজ টিকা কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নান বলেছেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকেই আগের চুক্তির মাধ্যমেই এই টিকা আনার চেষ্টা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে যোগাযোগ রাখছি। তারা আমাদেরকে এখন যে ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে। আর ৩০ লাখ ডোজ এ মাসেই দেবে। এ মাসেই আরও ৫০ লাখ ডোজ দেয়ার কথা আছে।’
‘আমরা আরও চার কোটি ডোজ টিকা একইভাবে চুক্তির মাধ্যমে ক্রয় করে নিয়ে আসবো। নতুন চার কোটি ডোজ কেনার জন্য আমরা সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সচিব বলেন, ‘আমরা এখন তিন কোটি ডোজ সেরাম থেকে পাচ্ছি। আরও অতিরিক্ত সাড়ে তিন কোটি বা চার কোটি ডোজ সিরাম থেকেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আমরা কিনে আনবো। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।’
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরও চার কোটি ডোজ টিকা কেনার ক্ষেত্রে কি নতুন করে চুক্তি করতে হবে, নাকি আগের চুক্তির ভিত্তিতেই আনা যাবে? এই প্রশ্নে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘আমরাতো আশা করছি, আগের চুক্তিটাই কন্টিনিউ করা যেতে পারে। এবং এটা আলোচনা সাপেক্ষে হবে।’
তিনি উল্লেখ করেছেন, সরকার টিকা দেয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। এই কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য তারা আগাম এসব ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
আগের চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট তিন কোটি ডোজের মধ্যে প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে সরবারাহ করার কথা বলেছিল। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ দিলেও পরের মাসে তারা ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে।