খবর৭১ঃ
অনুমতি না পেলেও খুলনায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছে বিএনপি। দুপুরে এই সমাবেশস্থলে আসার সময় নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধার সম্মূখীন হয়।
খুলনা মহানগরের দুই স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অনুমতি না দেয়ায় শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে খুলনা শহরের কেডি ঘোষ রোডস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
এর আগে সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে মহানগরীর প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ সময় সমাবেশ স্থলে আসার সময় নেতাকর্মীদের বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা। শত বাধা বিপত্তির পরেও সমাবেশে দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। বিকাল ৩টায় সমাবেশ শুরুর আগেই পুরো এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। এর আগে সকালে রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনার সমাবেশে নেতাকর্মীদের যোগ দেন সর্বশেষ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল গফ্ফার।
সভাপতির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সমাবেশ পণ্ড করার জন্য পুলিশ বাড়ি বাড়ি যেয়ে ভয়-ভীতি এবং দুদিনে ৩১ জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারপরও মহাসমাবেশ সফল করেছে। তিনি দুঃখজনক বর্ণনা দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের খাবার হোটেলে পুলিশ তালা দিয়েছে। খেয়াঘাট-বাস বন্ধ করে দিয়েছেন। এটি তাদের প্রতিহিংসার ফল। আগামীতে নির্বাচনকে অর্থবহ করতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের দাবি করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহাজাহান ওমর (বীর উত্তম) বলেছেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে। আওয়ামী লীগ জনগনের ম্যান্ডেটে কখনো ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বিনাভোটে-বিনা পরিশ্রমে তারা এমপি বানিয়েছে। একজন এমপি বা একজন মেয়র হতে হলে ঘন্টার পর ঘন্টা, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ জনগনের খেদমত করতে হয়। একটা সীট জনগণের খেদমত করে আসে। আর এরা জনগনের কাছে যায় না, এমনিতেই এমপি মেয়র হয়।
খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজনে শাহাজাহান ওমর (বীর উত্তম) বলেন, মেজর জিয়ার খেতাব বাতিলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ অচিরেই আন্দোলন গড়ে তুলবে। ব্যাংক লুটকারী ও জাতীয় সম্পদ লুটকারী আ’লীগের পতনের সময় এসেছে। সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহব্বান জানান।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খুলনার মহাসমাবেশে কর্মীদের আসতে পথে পথে বাধা দিয়েছে। তারপরও হাজার হাজার জনতা সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সরকার পতনের ডাক দিয়েছে। তিনি বলেন এ বছরই সরকারের শেষ সময়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছেন। ১৬ কোটি মানুষ ভোট দিতে পারছেন না। রাতের অন্ধকারে জনগণের ভোট ছিনিয়ে নিয়ে দলের এমপি বানিয়েছেন। তারাই ব্যাংক লুট করছেন। শেয়ারের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ প্রশাসন দেশকে সর্বনাশের দিকে নিয়েছে। শহীদ জিয়ার খেতাব বাতিলের নিন্দা করেন।
এছাড়াও সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, সাবেক হুইপ মশিউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশালের মেয়র প্রার্থী মুজিবর রহমান সরোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, রাজশাহীর মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থী ডাঃ শাহাদাৎ হোসেন, ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী রুমি, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি সোহরাব উদ্দীন, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবৃদ শামীমুর রহমান শামীম।