যুবরাজের নির্দেশে খাসোগি হত্যা, মার্কিন প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান সৌদির

0
304

খবর৭১ঃ বহুল আলোচিত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে অভিযান চালানোর অনুমতি দেন সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদন পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের দপ্তর নিজেদের ওয়েবসাইটে চার পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। খবর রয়টার্স ও খালিজ টাইমসের

মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে আমরা এই মূল্যায়নে পৌঁছেছি যে, জামাল খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অভিযানে সৌদি যুবরাজের যে অনুমোদন ছিল তা তিনটি কারণে বিশ্বাস করা যায়। প্রথমত, ২০১৭ সাল থেকে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ; দ্বিতীয়ত, খাসোগি হত্যায় তার একজন উপদেষ্টার সরাসরি জড়িত থাকা এবং তৃতীয়ত, বাইরের দেশে অবস্থানরত ভিন্ন মতাবলন্বীদের দমনে সহিংস পদক্ষেপ গ্রহণে তার সমর্থন।

এই প্রথম মার্কিন সরকার খাসোগিকে হত্যার জন্য সরাসরি সৌদি যুবরাজকে দায়ী করল। মোহাম্মাদ বিন সালমান শুরু থেকে এই হত্যাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করে আসছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, খাসোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে সৌদি আরবের ৭৬ নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এসব সৌদি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না। তবে বাইডেন প্রশাসন সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তাভাবনা করছে না।

মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সৌদির নেতৃত্ব সম্পর্কিত প্রতিবেদনে এই মূল্যায়ন নেতিবাচক, মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য।

প্রতিবেদনে ভুল তথ্য ও সিদ্ধান্ত রয়েছে বলেও সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

২০১৮ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনস্যুলেটে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন হন খাসোগি। সৌদি আরব থেকে বিশেষ বিমানে করে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল তাকে হত্যা করার জন্য আগেই ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছিল এবং তারাই খাসোগিকে হত্যা করে তার লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে। এখন পর্যন্ত খাসোগির লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

খাসোগি হত্যার দায়ে সৌদির একটি আদালত দেশটির পাঁচজন নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে তাদের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।

শুরুতে খাসোগি খুন হওয়ার কথা অস্বীকার করে সৌদি আরব। পরে দেশটির সরকার স্বীকার করে, কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। সৌদি যুবরাজ এই হত্যায় তার সম্পৃক্ততার কথা শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছেন।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগের দিন বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফোনালাপে সৌদির বাদশাহর কাছে মানবাধিকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাইডেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here