খবর৭১ঃ বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার ধনখালী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা কেশব লাল মন্ডলকে জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করায় মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদারকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মোংলা শাখা ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা কেশব লাল মন্ডল বলেন, মোংলা থানার মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদার বিএনপির ক্ষমতার সময় ছাত্র শিবিরের লোক ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কতিপয় নেতাদের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে। পরে যুবলীগ নেতা হয়। এক পর্যায়ে লবিং করে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় তার দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজী। অল্প কয়েক দিনেই কোটি কোটি ঠাকার ব্যাংক ব্যালেন্স ও সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে। বন্দর ও মোংলা এলাকায় তার রয়েছে দুটি বিলাসবহুল বহুতল ভবন, অত্যাধুনিক হোটেল, পাজারো গাড়ি, ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে একাধিক প্লট। সরকারি জমিও ডিসিআর নিয়ে দখলে রেখেছে এই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান। যদিও চেয়ারম্যান হওয়ার আগে তার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার পিতা ছিল একজন ফেরিওয়ালা। ইস্রাফিল হাওলাদার ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। শুধু তাই নয় তার রয়েছে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। চেয়ারম্যান ও তার বাহিনীর অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
তিনি আরো বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়ায় একপর্যায়ে তার নানা অপকর্মের প্রতিবাদ করি। এতে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জনসম্মুখে আমাকে নানাভাবে লাঞ্ছিত করে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এক পর্যায়ে সে আমাকে মারতে আসে এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়। বাসার বাইরে বের হলে খারাপ হবে বলেও হুমকি দেয়। এর আগে আমার আপন ভাইপো সুখদেব মন্ডলকে ধরে নিয়ে বেধরক মারধর করে এই নির্যাতনকারী চেয়ারম্যান। পরে তাকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। আমি থানায় মামলা করতে গেলেও থানা কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহন করেননি। এমতাবস্থায় আমি ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করছি। সে যেকোনো সময় আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের বড় কোনো ক্ষতি করতে পারে। তার হাত থেকে বাঁচতে আমি প্রধানমন্ত্রীসহ যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পাশাপাশি তাকে আওয়ামী লীগে থেকে বহিস্কার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। যাতে আর কেউ তার মতো আওয়ামী লীগের দুর্নাম না করতে পারে।
মানববন্ধনে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তাপস পাল, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান যুব ঐক্য পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নরেন্দ্র নাথ মজুমদারসহ সাংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী।