আমিনুল ইসলাম বজলু, পাইকগাছা (খুলনা): পাইকগাছায় চিংড়ী ঘেরের লবণ পানির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোরো ফসল। মৌসুমের শুরুতেই লবণ পানি উত্তলন করায় উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়ানের চকহিতামপুর বিলের ৫০ জন কৃষকের শতাধীক বিঘা জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সংসদ সদস্য বরাবর ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে উপজেলার চকহিতামপুর বিলে দীর্ঘদিন লবণ পানির চিংড়ী চাষ হয়ে আসছে। গত ২ বছর এলাকার কৃষকরা বিলের একাংশে স্যালো মেশিন স্থাপন করে বোরো ফসল আবাদ ও মিষ্টি পানির মাছ চাষ করছে। এ বছরও চরমলই, মেলেক পুরাইকাটি, গদাইপুর ও হিতামপুর গ্রামের ৫০ থেকে ৬০ জন কৃষক বিলের গ্রামের পাশদিয়ে শতাধিক বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছে। ইতোমধ্যে ধান রোপনের কাজ সম্পন্ন করেছে কৃষকরা। এদিকে অত্রবিলে চরমলই গ্রামের আজিজুল হক সানা, সিরাজুল হক সানা ও বহিরাগত জৈনক সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি লবন পানির চিংড়ী চাষ করছে। ঘেরের লবণ পানিতে বোরো ফসলের ক্ষতি হওয়ায় এলাকার কৃষকরা গত ১২ জানুয়ারী ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবুর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে এমপি বিষয়টি তদন্ত পূর্বক শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপর দায়িত্ব অর্পন করে। ইউএনওর নির্দেশে এসিল্যান্ড মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলে জানা গেছে। এব্যাপারে কৃষক হাফেজ মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর আমি ২০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। বর্গা চাষি কাজী মূকুল জানান, আমি ১৫বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। গত বছর লবণ পানির কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আব্দুল মান্নান গাজী জানান, গত বছরের ন্যায় এ বছর ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা কৃষকরা নিঃশ্ব হয়ে যাবো। ঘের মালিক আজিজুল হক সানা জানান, এ বছর বোরো ফসলের পাশে আমার কোন ঘের নেই। আমার একটি ঘের আছে যা ওয়াপদার পাশে। ঘের মালিক সাইদুর রহমানকে ফোন দিলে রিসিভ না করায় কোন মন্তব্য জানা যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, এসিল্যান্ডকে দিয়ে সরেজমিন তদন্ত করিয়েছি। লবণ পানির কারণে বোরো ফসলের যাতে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় এ জন্য লবণ পানি উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে মজবুত বাঁধ দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় ঘের করার জন্য ঘের মালিকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।