খবর৭১ঃ করোনাভাইরাস মহামারিকালে ছাত্রলীগের ভূমিকার প্রশংসা করে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের সমালোচনা উপেক্ষা করে কাজ করে যেতে বলেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
মহামারি মোকাবেলায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমরা যে কাজগুলো করে গেছ, তার জন্য সব সময় আমরা সাধুবাদ জানাই। আমি জানি হয়ত ক্ষেত্রবিশেষে কোথাও কোথাও দুই-একটা ঘটনা ঘটে। আর আমাদের কিছু পত্র-পত্রিকা আছে, যতই ভালো কাজ কর, সেটা লেখার তাদের যোগ্যতা নেই। যদি কোথাও এতটুকু খুঁত পায়, সেটিকে বড় করে লিখতে পারে। এটা তাদের মন-মানসিকতার দৈন্যতা বলেই আমি মনে করি। কাজেই ওগুলো আমি বেশি একটা হিসেবে ধরি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখি যে বৃক্ষরোপণ করা, ধান কেটে কৃষককে সহযোগিতা করা বা করোনা ভাইরাসের সময়ে আক্রান্ত রোগী এবং যারা মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাহায্য করা, ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেয়া, যখন ঝড় এলো, সেই ঝড়ের সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, এই যে মানুষের সেবার জন্য যেই কাজগুলো করে যাচ্ছ, সেটাই হচ্ছে বড় কাজ।’
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জনে ছাত্রলীগের অগ্রণী ভূমিকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ঐতিহ্যের কথা মনে রেখে এই সংগঠনটাকে শক্তিশালী করে তোমরা গড়ে তুলবে। সেটাই আমরা চাই। মনে রাখবে, যে আদর্শ নিয়ে গড়ে তুলতে পারবে নিজেকে, সেই কিন্তু সফল হবে। আর যদি অর্থ সম্পদের দিকে নজর চলে যায়, কখনও সফল হতে পারবে না।’
আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তৈরি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারণ আমাদের আর কত..৭৫ বছর বয়স। আর কতদিন। ছাত্রলীগের ৭৩, আমার ৭৫। কাজেই আমিও ৭৫ এ পা দিয়েছি। কাজেই আমরা কতদিন আর চলবো। কিন্তু তোমাদেরকে কিন্তু সামনে নেতৃত্ব দিতে হবে। সেইভাবে তোমরা নিজেদেরকে গড়ে তুলবে।’
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগ নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ৭৩ বছর পূর্ণ করছে সোমবার। আলোচনায় শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতার আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার কথাও বলেন তিনি। জাতির পিতাকে হত্যার পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের চাওয়ার টানে দেশে ফেরার কথাও বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে আলোচনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বক্তব্য দেন।