খবর৭১ঃ শীতের অন্যতম প্রিয় খাবার মটরশুটি। যাদের বেশি প্রিয় তারা প্রায় সব তরকারিতেই মটরশুটি দেন। ইউরিক অ্যাসিডের চোখরাঙানি না থাকলে মটরশুটি হতে পারে আপনার গুরুত্বপূর্ণ খাবার।
পুষ্টিবিদদের মতে, ‘নিরামিষাশী হোন বা আমিষাশী, এই সব্জি ব্যবহার করা যায় সব রকমের পদে। যেকোনো স্যালাডেও এর ব্যবহার রয়েছে। প্রোটিনের চাহিদা মেটায় মটরশুঁটি। ২ টুকরা মাছ বা তিন টুকরা মাংসের থেকে যে প্রোটিনের জোগান পাওয়া যায়, সেই প্রোটিনই মেলে এক বাটি মটরশুঁটি থেকে’। শীতে মটরশুঁটি যেমন প্রোটিনের চাহিদা যেমন মেটাবে, তেমনই শরীরের আরও নানা উপকারেই তা লাগে।
যৌবন ধরে রাখে
মটরশুঁটি যদি আপনি নিয়মিত খান, সেক্ষেত্রে আপনার শরীর তো সুস্থ থাকবেই, একইসঙ্গে চুল এবং ত্বকও হয়ে উঠবে ঝলমলে ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল। মটরশুঁটিতে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের ক্ষেত্রে অ্যান্টি এজিংয়ের কাজ করে। অর্থাৎ ত্বক টানটান রাখে এবং জেল্লাদার করে তোলে। ত্বকে বলিরেখাও পড়তে দেয় না।
বাড়তি মেদ ও ওজন কমায়
বাড়তি মেদ ও ওজন আমাদের জীবনের একটি অন্যতম সমস্যা। নানা ডায়েট চার্ট মেনে চলার চেষ্টা করেও অনেকসময়েই ওজন কমতে চায় না। স্ট্রিক্ট কিছু ডায়েট চার্ট আমরা তৈরি করে নিই ঠিকই। কিন্তু অনেকের পক্ষেই খুব বেশিদিন তা মেনে চলা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে প্রতিদিনের খাবারে আপনি মটরশুঁটি যোগ করতে পারেন। মটরশুঁটিতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম আর পেটও বেশ অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কাই নেই। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলকে জমতে না দিয়ে হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে এই সবজি।
ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
যাদের ডায়েবেটিসের সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি, তারা কী খাবেন আর কী খাবেন না, তা নিয়ে খুব কনফিউশনে ভোগেন। যা-যা খেতে ইচ্ছে করে, তা খেতে পারেন না। আর যেগুলো খাওয়া যায়, সেগুলো হয়তো খেতে ভাল লাগে না। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়ম করে প্রতিদিন খাবারে মটরশুঁটি খাওয়ার উপদেশ অনেক চিকিৎসক দিয়ে থাকেন। এর অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান শরীরের টক্সিন দূর করে ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
রোগের প্রতিষেধক
মটরশুঁটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। ফলে নানা রকমের অসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে এই সবজিটি। এছাড়াও এতে নানা প্রাকৃতিক খনিজ যেমন ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালশিয়াম, জিঙ্ক ইত্যাদি রয়েছে, যা শরীরে ভিতর থেকে পুষ্টি যোগায় এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। মটরশুঁটির অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও এর ভূমিকা রয়েছে। মটরশুঁটি থেকে প্রচুর প্রোটিন মেলে। তাই ওবেসিটির রোগীদের ফুল প্রোটিন ডায়েটে মটরশুঁটি অন্যতম উপাদান।
হৃদরোগের থেকে বাঁচায়
মটরশুঁটিতে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্ত চলাচল ঠিক রাখে। মটরশুঁটিতে উপস্থিত ভিটামিন বি, আর ফলেট‚ বিওয়ান‚ বিথ্রি‚ বিসিক্স শরীর থেকে হোমো কেইসেটেইন লেভেল কম করে। আর এর ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। বাতাস থেকে নাইট্রোজেন নিয়ে মাটিতে চালান করতে সাহায্য করে মটরাশুঁটি গাছ। এর ফলে আর্টিফিসিয়াল সার দেওয়ার প্রয়োজন অনেকটা কমে যায়। মটরশুঁটি চাষ হয়ে গেলে মটরশুঁটি গাছ থেকে ভালো অর্গানিক সার তৈরি হয়। এছাড়াও মটরশুঁটি গাছের খুব কম আর্দ্রতা প্রয়োজন হয়। এতে উপস্থিত নিয়াসিন শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড আর লাইপো প্রোটিন কম করতে সাহায্য করে যার ফলে শরীরে ব্যাড কোলেস্টেরোল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কম হয়।