খবর৭১ঃ করোনাভাইরাস মহামারিতে থমকে আছে গোটা বিশ্ব। বিশ্ব অর্থনীতিকে থামিয়ে দিয়েছে এই ভাইরাস। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এর রূপ বদল করলেও সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতির করোনাভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। ব্রিটেন শুরুতে এই প্রজাতির সন্ধান পায়। তবে আরও আশঙ্কার কথা হলো ব্রিটেনের পাওয়া করোনার নতুন প্রজাতি ছাড়াও আরও এক প্রজাতির সন্ধান মিলেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এই প্রজাতি তরুণদের মধ্যে দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সাথে মিলে করোনাভাইরাসের এক নতুন সংস্করণের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে। এটির নাম ফাইভ জিরো ওয়ান ভি-টু (501.V2) এবং এটি চিহ্নিত করে কোয়াজুলু-নাটাল রিসার্চ ইনোভেশন এ্যান্ড সিকোয়েন্সিং প্ল্যাটফর্ম বা ক্রিস্প নামে এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একটি দল। খবর বিবিসির
এই ভাইরাস ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক মাত্রায় ছড়াচ্ছে, বিশেষ করে আগেকার তুলনায় এই নতুন রূপের করোনাভাইরাসটি তরুণ জনগোষ্ঠীকে বেশি করে সংক্রমিত করছে। বলা হচ্ছে, এটির সাথে যুক্তরাজ্যে দেখা দেয়া মিউটেশনটির বেশ কিছু মিল আছে – তবে হুবহু এক রকম নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ফাইভ জিরো ওয়ান ভি-টু এখন করোনাভাইরাসের প্রধান ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হয়েছে। ব্রিটেনের দক্ষিণে লন্ডন ও এসেক্স কাউন্টিতে এই নতুন মিউটেশন আগের ভাইরাসগুলোকে হটিয়ে দিয়েছে। এগুলো হয়তো আগের চাইতে বেশি মাত্রায় ছড়াচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, কিন্তু এখনো অনেক কিছুই স্পষ্ট নয়।
বুধবারই ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের আরেকটি নতুন সংস্করণে আক্রান্ত দু’জনকে সনাক্ত করা হয়েছে- যারা দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিল। এ ভ্যারিয়েন্টটিও খুব সহজে মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে। এর পর দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে এবং যারা গত ১৫ দিনের মধ্যে সেখানে গিয়েছিলেন তাদের অবিলম্বে কোয়ারেন্টিনে যেতে বলা হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতোমধ্যেই এই বিশেষ ভ্যারিয়েন্টটি ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে। যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ছড়ানো ভাইরাসটির সাথে এর মিল আছে, তবে তারা আলাদাভাবে বিবর্তিত হয়েছে। দুটি ভাইরাসেরই এন ফাইভ জিরো ওয়ান ওয়াই নামে একটি অভিন্ন মিউটেশন হয়েছে – যা মানবদেহকোষে সংক্রমণ ঘটাতে সক্রিয় ভুমিকা রাখে।
দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন কোভিড-১৯ রোগীদের দেহেও সহজে ছড়াতে পারে এমন মিউটেশন পাওয়া গিয়েছিল – যেখানে ভাইরাসটি কোন রকম লক্ষণ দেখা দেবার আগে কয়েকমাস ধরে অবস্থান করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টটি কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে তার একটা ধারণা হয়তো এখান থেকে পাওয়া যেতে পারে। হয়তো দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন রোগীদের দেহে ভাইরাসটি কয়েক মাস ধরে নিরাপদে অবস্থান করেছে এবং সেখানেই এ মিউটেশনগুলো ঘটেছে।