আওয়াল, মদন (নেত্রকোনা)ঃ নেত্রকোনার মদনে কালাচাঁন হত্যার জের ধরে মদন দক্ষিণ পাড়া গ্রামে দফায় দফায় অর্ধশতাধিক বসত বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের অভিযোগ উঠেছে। হত্যার পর থেকে আসামী পক্ষের লোকজন বাড়িতে না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। পুলিশের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প ঘটনাস্থলে থাকার পরও ভাংচুর,লুটপাট অগ্নিকান্ড ঘটায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বাদী পক্ষের দাবি আসামী পক্ষরে লোকজন তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করার জন্য নিজেরাই তাদের বসত বাড়ি ভাংচুর করছে।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সরজমিন মদন দক্ষিণ পাড়া গ্রামে গেলে দেখা যায় ভাঙ্গা চুরা অবস্থায় অর্ধশতাধিক বসত ঘর রয়েছে। একটি বাড়িতে খড়েরর স্তুপের পুড়া অংশ রয়েছে। এর মধ্যে আসামী আহাদ মিয়া,শহীদ দিয়া, কাজল, হুমায়ূন, শরীফ, জসিম উদ্দিন, হাসেম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন, ফারুক, হারুল, সাইফুল, হাদিস, বিপুল, সালেক, শফিকুল, রাসেল, রফিকুল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রহিছ মিয়ার বসত ঘরসহ অর্ধশতাধিক বসত বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করার দৃশ্য চোখে পড়ে।
আসামী পক্ষের বাড়ি ঘরে কোনো পুরুষ লোক পাওয়া যায়নি। কয়েক জন বৃদ্ধা নারীর সাথে দেখা হয়। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আসমী পক্ষের কয়েকজন বৃদ্ধা নারী অভিযোগ করে বলেন, বাদী পক্ষের মনসুর আলীর ছেলে জাকির, রুখতনসহ ২০/২৫ জন লোক ধাড়ালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দফায় দফায় আমাদের বসত ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে থাকা যাবতীয় মামলামাল, গবাদি পশু গরু, ছাগল লুটপাট করে নিয়ে বসত ঘর ভাংচুর করে। আমরা বাধা দিতে চাইলে মারপিট করে তাই ভয়ে কিছু বলি না।
নিহতের ছেলে মামলার বাদী আবুল কাশেম মানিক বলেন, আসামী পক্ষের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করার জন্য নিজেরাই তাদের বসত ঘর ভাংচুর করছে। লুটপাট,ভাংচুর যাতে না হয় আমি নিজেই অস্থায়ী ক্যাম্পের পুলিশ কে সহযোগীতা করছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই দেবাশীষ চন্দ্র দত্ত ভাংচুর ও লুটপাটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন কিছু ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। সেখানে পুলিশ ক্যাম্প নিয়োজিত আছে। নতুন করে আর হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খালিয়াজুরি সার্কেল) জামাল উদ্দিন জানান, মদন দক্ষিণ পাড়া গ্রামে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে। রাতের অন্ধকারে লুটপাট, ভাংচুর হলে আমাদের কি করার আছে। ভাংচুরের শব্দ শুনে পুলিশ গেলে কাউকে পাওয়া যায় না। তবে আসামী পক্ষের লোকজন অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত ১৬ ডিসেম্বর বোরো জমির দখল কে কেন্দ্র করে মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের সামনে হাওর আইন বিলে দু-পক্ষের সংঘর্ষে মৃত দেওয়ান আলীর ছেলে কৃষক কালাচাঁন(৬৫) নিহত হয়। ওই দিন রাতেই নিহতের ছেলে আবুল কাশেম মানিক ৭০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫/২০ জনকে আসামি করে মদন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।