খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে সতন্ত্র মেয়র প্রার্থী, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র মোঃ ছালেক মিয়ার বার্ষিক আয় ৫২ লাখ ৬০ হাজার ৫ শ টাকা। এ হিসেবে তার মাসিক আয় ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩৭৫ টাকা। তার আয়ের উৎসগুলো হলো– কৃষি ও মৎস্যখাত থেকে বছরে ৪০ লাখ ৫ হাজার টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকান ভাড়া থেকে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৫শ টাকা, ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও মেয়রের সম্মানী হিসেবে বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় হয়।
মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন অফিসে প্রদত্ত হলফনামায় তিনি আয়ের এ তথ্য প্রদান করেন। মেয়র প্রার্থী মোঃ ছালেক মিয়া শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার দক্ষিণ বড়চর এলাকার মরহুম আব্দুল ওয়াহাব ও নজিরা খাতুনের ছেলে। তিনি শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমানে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়র। হলফনামায় তাঁর শিকষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত উল্লেখ করেছেন। পেশা ব্যবসা। তার বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। অতীতে আরো ২টি মামলা তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে অতিরিক্ত জুডিশিয়া ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে একটি মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন। আরেকটি মামলায় চার্জশীট থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাকে। তাঁর কাছে নগদ রয়েছে ৩ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা আেেছ ২৮ হাজার ৭১৬ টাকা। তার ১০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে।
বাসায় এসি ৪টি, ফ্রিজ ১টি, টিভি ২টি, ওভেন ১টি, ফ্যান ৬টি, মোবাইল ২টিসহ আরো ইলেকট্রনিক্স পণ্য ফার্নিচার রয়েছে। তাঁর নামে ০.৩১৯৬ একর অকৃষি জমি, দালান ৩টি ও জেলা পরিষদ থেকে ৩টি লীজকৃত দোকান রয়েছে। তিনি বাড়ি নির্মাণের জন্য ইসলামী ব্যাংক শায়েস্তাগঞ্জ শাখা থেকে ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এই ঋণ গ্রহণ করেছেন গত (২০২০ সালের) ৯ নভেম্বর। মেয়র প্রার্থী ছালেক মিয়ার স্ত্রীর ৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রীর কাছে রয়েছে নগদ ১ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ১ লাখ ২১ হাজার ৬৯২ টাকা, ২টি মোবাইল ফোন, ফ্রিজ ১টি, ৩টি ফ্যানসহ ফার্নিচার। এছাড়াও পরিবারের অন্যান্যদের কাছে আরো ২টি মোবাইল ফোন রয়েছে। গত নির্বাচনে মেয়র ছালেক মিয়া নির্বাচনী হলফনামায় সম্পত্তি ও আয়ের বিবরণী উল্লেখ করেন – বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ও অন্যান্য ভাড়া ১,২০,০০০ টাকা। ব্যবসা ১,৫০০০০ টাকা । হলফনামায় আরো উল্লেখ করেন নগদ ৫,৭০০/- টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠাত জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৩৯২৫ টাকা। তার স্ত্রীর নামে ৮০০০/- টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১০ ভরি স্বর্ণ ছিল।
কৃষিখাতে ও মৎস্যখাতে কোন আয় ও বাড়ি ছিল না। ২০১৬ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে ৫ বছরে তার আয় ও সম্পদ বেড়ে গেছে কয়েকগুন। ২০১৬ সালে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ চরনুর আহমদ মৌজার ৮৮৮ দাগে রেলওয়ে জমি দখল করে ১০০ টি দোকানঘর বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এই অবৈধ দোকানঘর থেকে। পৌরসভার নাম করে প্রতি দোকান থেকে মাসে ৩০০০ টাকা ভাড়া আদায় করেন। শুধু তাই নয় রেলওয়ে পুকুর দখল করে মাছ চাষসহ বিভিন্ন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে অনেক স্থানী ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হয়। শুধু তাই নয় পৌর পরিষদের ০৭ জন কাউন্সিলর তার বিরুদ্ধে বছর খানেক আগে অনিয়মের অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
নির্বাচনী হলফনামায় তার আয় ও সম্পত্তির বিবরণী প্রকাশ হওয়ার পর জনসাধারণের মনে মিশ্র পতিক্রিয়া দেখা দেয়। শায়েস্তাগঞ্জের সম্প্রতি পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নৌকা প্রতীক চেয়ে ও পাননি দলীয় মনোনয়ন। তিনি সতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।