খবর৭১ঃ
দোকানের কর্মচারী থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে রাজধানীর বাড্ডা থানার ৩ মামলায় ফের ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার দুজন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পৃথক আদেশে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২২ নভেম্বর এসব মামলায় তার ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। তবে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ৭ দিনের পৃথক রিমান্ড একত্রে চলমান থাকায় ১১ দিনে শেষ হয় এই রিমান্ড।
প্রথম দফা রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসীন গাজী। অপরদিকে একইদিনে মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক জানে আলম দুলাল ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ৩ দিন করে ৬ দিন এবং মাদক মামলায় অপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুই মামলার রিমান্ডের আদেশ পৃথক হলেও জিজ্ঞাসাবাদ একত্রে চলবে।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ নভেম্বর সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার নিজ বাসা থেকে গোল্ডেন মনিরকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাসা থেকে ৬০০ ভরি সোনার গহনা, বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০ দেশের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ এক কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
এছাড়া, তার বাড়ি থেকে অনুমোদনহীন দুটি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়, যার প্রতিটির বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। তার ‘অটো কার সিলেকশন’নামের গাড়ির শোরুম থেকে আরও তিনটি অনুমোদনহীন বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় দুই শতাধিক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক গোল্ডেন মনির। রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে অসংখ্য প্লট হাতিয়ে নেন তিনি। তবে প্রাথমিকভাবে ৩০টি প্লট ও ফ্ল্যাটের কথা স্বীকার করেছেন মনির।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। এর আগেও গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এবং রাজউকের একটি মামলা রয়েছে। মনির মূলত একজন হুণ্ডি ব্যবসায়ী ও স্বর্ণের চোরাকারবারি। এ থেকেই মনির পরিচিতি পান ‘গোল্ডেন মনির’ হিসেবে। গত ২১ নভেম্বর আটক করার পর র্যাব-৩ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া গোল্ডেন মনিরকে বাড্ডা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় র্যাব বাদী হয়ে মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিশেষ ক্ষমতা ও মাদক আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে।