রেদোয়ান হোসেন জনি, মিরসরাই প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ ১৭ বছর পর মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় স্থানীয় মিঠাছরা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও সীতাকুন্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এম আল মামুন। উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক নুরুল মোস্তফা মানিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুব রহমান রুহেল। উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোশাররফ হোসেন মান্নার সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম রাশেদুল আলম।
উদ্বোধক এস.এম আল-মামুন বলেন, ‘রাজনীতিতে হারানোর কিছু নেই। সংগঠনের মূল পদ সভাপতি-সম্পাদক হলেও সংগঠনকে ভালোবাসলে যেকোন পদে থেকে কাজ করা যায়। আমি সভাপতি-সম্পাদক হলাম না তাই বলে সংগঠনকে বিতর্কিত করার জন্য উশৃঙ্খল কাজ করবো তা হবে না। সংগঠনের নীতি-আদর্শ ধারণ করে আমাদের রাজনীতি করতে হবে।
প্রধান বক্তা এস.এম রাশেদুল আলম বলেন, ‘যুবলীগের অনেক নেতাকর্মী আদর্শচ্যুত। যুবলীগকে ব্যক্তির পূজা নয়। সংগঠনের আদর্শকে লালন করতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাতে স্বাধীনতা বিরোধীদের অনেক সমর্থক যুবলীগে অনুপ্রবেশের সুযোগ খুঁজছে। কোন স্বাধীণতা বিরোধী যাতে যুবলীগে সংযুক্ত হতে না পারে সেজন্য তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে।’
প্রধান অতিথি মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, ‘বর্তমান যুবসমাজ মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। ইয়াবা সেবনে আসক্ত হয়ে দেশের আগামীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যুবলীগকে মাদকমুক্ত মিরসরাই গঠনে কাজ করতে হবে। মিরসরাইয়ের মাটি ও জনগণকে ভালোবাসতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য যুবলীগকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বর্তমান সরকার দেশের সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ করছে। নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন হচ্ছে। যুব সমাজকে রাজনীতির পাশাপাশি চাকুরীর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। উপজেলা যুবলীগের সম্মেলনে আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায় প্রধান অতিথি মাহবুব রহমান রুহেলকে। উপজেলার মিঠাচরা স্কুল মাঠে তাঁর বাবার ১ম নির্বাচন ৭০ এর নির্বাচনী প্রচারণার কথা তুলে আনেন। যুবলীগের পথচলা কেমন হবে, নেতৃত্বে কারা আসবে তার একটা আভাস দেন।
তিনি যুব সমাজের জন্য সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে, দেশের উন্নয়নে যুবলীগকে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান। বঙ্গবন্ধু যে উদ্দেশ্যে যুবলীগ গঠন করেছেন তা তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে আরো বলেন, যুবলীগ শুধু রাজনৈতিক হাতিয়ার নয়, যুব সমাজের জন্য যারা মাদক মুক্ত মিরসরাই গড়তে পারবে তারা আগামী দিনের মিরসরাই যুবলীগের নেতৃত্বে আসবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া, মিরসরাই পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বশির উদ্দিন খান, মুজিবুর রহমান স্বপন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন তপুসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদক, ইউনিয়ন যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন আলোচনা সভা দিয়ে শেষ হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি-সম্পাদক পদে আগ্রহী প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস.এম আল মামুন বলেন, যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদক পদে আগ্রহী প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত রবিবার (২৮ নভেম্বর) বিকাল ৫ টা পর্যন্ত জমা নেওয়া হবে। প্রথম দিন ১৭ জনের জীবন বৃত্তান্ত জমা হয়েছে। প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠানো হবে। মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সাথে পরামর্শ করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবে।