খবর৭১ঃ লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে মানব ও মুদ্রা পাচার মামলায় কুয়েতের একটি আদালত আগামী ২৮ জানুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন। বৃহস্পতিবার এ মামলার শুনানি শেষে বিচারক রায়ের এ তারিখ ঘোষণা করেন। কুয়েতের একটি কূটনৈতিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত ৬ জুন রাতে কুয়েত সিটির বাসা থেকে দেশটির গোয়েন্দারা শহিদ ইসলামকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে মানব ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাত দফায় শুনানি হয়। প্রথম দিনের শুনানিতে কুয়েতের সরকারি কৌঁসুলির প্রশ্নের জবাবে সাংসদ শহিদ তাঁর বিরুদ্ধে আনা মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের পাশাপাশি ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আদালতকে বলেন, কুয়েতের দুই সাংসদ সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহ—তাঁদের কাউকে তিনি চেনেন না। তাঁদের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে শহিদ ইসলামের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাঁকে অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহকে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর দুই সাংসদ সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদ ঘুষ নিয়ে শহিদ ইসলামকে অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সহযোগিতা করেছেন, এমন তথ্য দেশটির গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কুয়েতের রাজনৈতিক অঙ্গনেও এ নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুই সাংসদ সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদ এবং জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহর নামও রয়েছে। অবশ্য এরই মধ্যে মুচলেকা দিয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন কুয়েতের দুই সাংসদ। আর বৃহস্পতিবার আদালত জামিন দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাকে।
কুয়েতের একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ আর আলামত দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের এই সাংসদের খালাস পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।