শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে কটাক্ষ করে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে সারা দেশের ন্যায় বেনাপোলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন মুসলমানরা।
শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে পূর্বঘোষিত খতিবদের ঘোষণানুযায়ী বেনাপোল পৌর ও পোর্ট থানা এলাকার সকল মসজিদ থেকে পিঁপড়ের সারির ন্যায় দলে দলে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকায় ছুটতে থাকেন রাসুল প্রিয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
বেনাপোল পোর্ট থানা ইমাম পরিষদের আয়োজনে ও ইমাম পরিষদের সভাপতি সাহিদুল বাশারের নেতৃত্বে সমাগমকৃত ১০/১২ হাজার মুসল্লীদের মিছিল ও ¯েøাগানে এলাকা প্রকম্পিত হয়। বেনাপোলের পাশর্^বর্তী এলাকা ভারত সীমান্ত হওয়ায় পুলিশি অনুরোধে ধর্মভিরু মুসলমানরা বেনাপোল বাজার হয়ে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পোর্ট থানার সামনে ঘুরে এসে কর্মসূচি শেষ করেন।
এর আগে, বেনাপোল বাজারে বিশাল এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেন মুসল্লীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল পোর্ট থানা ইমাম পরিষদের সাধারন সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আজিজুর রহমান, হাফেজ মাওলানা খলিলুর রহমানসহ এলাকার সকল মসজিদের ইমাম ও মুসল্লীগণ।
প্রতিবাদ সমাবেশে খতিবরা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নামে ঘৃণা প্রকাশ করেন। বলেন, ফ্রান্স সরকারের সহযোগিতায় প্যারিসের দেয়ালে দেয়ালে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর অবমাননাকর কার্টুন ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন ও অমর্যাদা মুসলমানদের কলিজায় আঘাত করেছে। বিক্ষুব্ধ মুসলমানদের হৃদয়ের এই ক্ষত মুছতে হলে ফ্রান্সকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে।
খতিবরা বলেন, গত ১৬ অক্টোবর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক স্কুল শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। হামলাকারীর বয়স ১৮ বছর। তিনি চেচেন জাতিগোষ্ঠীর এবং জন্ম রাশিয়ার মস্কোতে। নিহত শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেন। ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ ক্লাসে তিনি শিক্ষার্থীদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কার্টুন দেখিয়েছিলেন। তারপর তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর ফ্রান্সের পুলিশ দেশটির অন্তত ৫০ টি মসজিদ এবং মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভয়াবহ অভিযান চালায়। সাড়ে পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালে, ফ্রান্সের কুখ্যাত রম্য পত্রিকা শার্লি এবদো কর্তৃক বিশ্ব মানবতার মুক্তিদূত হযরত মোহাম্মদ সাঃ এঁর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে বিতর্কিত কার্টুন ছাপানোর পর ফ্রান্সের ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদোতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। সেসময়ে মুসলমানদের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি হয়েছিল তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আবারও সেটি ছাপিয়েছে ম্যাগাজিনটি। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও এর পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তাই, আমাদের যার যতটুকু সামর্থ আছে সেভাবেই মহানবী (সাঃ) এর ইজ্জত রক্ষায় নিজেদের নিবেদন করতে হবে।