নানা প্রত্যাশা নিয়ে মার্কিন নির্বাচনে চোখ বাংলাদেশের

0
449
নানা প্রত্যাশা নিয়ে মার্কিন নির্বাচনে চোখ বাংলাদেশের

খবর৭১ঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ বিতর্কের দ্বারপ্রান্তে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলীয় দুই প্রার্থী। বিতর্ক শেষে আগামী ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় ভোটে জয়ী হয়ে কে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউজে সেটার দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ব। বাংলাদেশও চোখ রাখছে যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনের ফলের দিকে।

ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলীয় দুই প্রার্থীর যিনিই হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করুন না কেন বাংলাদেশ দেশটির সঙ্গে যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে চাইবে- দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বাণিজ্য, রোহিঙ্গা ইস্যু, পোশাক রপ্তানি, অভিবাস ও রেমিটেন্স।

১৯৭২ সালের ৪ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং এরপর থেকে গত ৪৮ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে বিশেষ করে বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই এখন এককভাবে বড় দেশ।

আবার এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আসা প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রেও মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবের পরেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান।

সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের প্রধান চাওয়া হবে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল হোক এবং দেশটির বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়া। পাশাপাশি বিশাল ব্লু-ইকোনোমি কাজে লাগাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগানের সফরে বাংলাদেশের সমুদ্র অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

তাছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে বড় বিনিয়োগ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে পোশাক রপ্তানির পরিমাণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ স্থানে রয়েছে এবং এই রপ্তানি আরও বাড়ানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে সরকার।

বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো ভূমিকা চাইবে বাংলাদেশ। আর এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও শক্তভাবে ভূমিকা রাখতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৗহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সেখানে কোন দলের কে বিজয়ী হলো তা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্রনীতি হুট করে পরিবর্তন করে না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ যা পেতে পারে তা হলো বাণিজ্য ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে দেশটির শক্ত অবস্থান, রপ্তানি ক্ষেত্রে সুবিধার পাশাপাশি ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট এবং বৈধ অভিবাসনে আরও উদারতা।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের আরও শক্ত অবস্থান নেয়ার সুযোগ আছে এবং এটিই বাংলাদেশ প্রত্যাশা করতেই পারে।’

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দাতা দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অর্থের যোগান দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার জানান, সামনের দিনগুলোতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে দেশটি।

রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থা বজায় থাকুক সেটাই একমাত্র চাওয়া হবে ঢাকার। দেশটিতে বর্তমানে আট লাখের বেশি অভিবাসী রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব অভিবাসীর পাঠানো রেমিটেন্স আরও বৃদ্ধি পাবে সেই আশায় থাকবে বাংলাদেশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসিন বিবিসিকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে সম্মান করতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কংক্রিট অবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে যুক্তরাষ্ট্রের এবং বাংলাদেশ চায় যুক্তরাষ্ট্র সেটুকুই করুক।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here