দায়ীদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
412

খবর৭১ঃ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসত্য তথ্য দিয়ে নিয়মিত বাহিনীগুলোর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে একটা অন্য ধরনের পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে।

আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিলেটের ঘটনাটি এখন তদন্তে রয়েছে। সেখানে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে। আমরাও দেখেছি। কোতোয়ালি থানাধীন কাস্টঘর এলাকা থেকে রায়হানকে ধরে আনা হয়েছিল। হঠাৎ করে সকাল ৬টার দিকে অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, তার ময়নাতদন্ত হচ্ছে কিংবা হবে- সেই অনুযায়ী এবং তার স্ত্রী যে মামলা করেছেন সবগুলো আমলে নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হবে। তদন্ত অনুযাযায়ী অবশ্যই দায়ীদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। এ বিষয়ে পিবিআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পিবিআই যাতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করতে পারে।

গুজব ছড়ানো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার) ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। সব সময় মনিটর করছে, কে করছে, কোথা থেকে আসছে। আমরা সেই জায়গাটিতে কাজ করছি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সেখানে কাজ করছে। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। যেগুলোর বিষয়ে অবজেকশন দিচ্ছি বা পরিচয় চিহ্নিত করার জন্য মাঝে মাঝেই, তারা কিন্তু আমাদের দিচ্ছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) যে প্রেস রিলিজটি দিয়েছি, আপনারা দেখেছেন- সামাজিক অস্থিরতা বাড়ানোর জন্য অনেক তথ্য আসছে সেগুলোর সত্যতার ঘাটতি রয়েছে বা অপলাপ হচ্ছে। আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা খবর প্রচারিত হচ্ছে। আদালতের রায় নিয়েও সমালোচনা করছেন। বিভিন্ন কায়দায় একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য মিথ্যা-অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। জনগণের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য।আমাদের নিয়মিত বাহিনীগুলো মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য অসত্য তথ্য দিয়ে একটা অন্য ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য তারা এই কাজগুলো করছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হওয়াতে আমরা এই প্রেস রিলিজটি দিয়েছি।

কারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এগুলো তো আপনারা দেখছেন। কিছু কিছু নাম আছে। এগুলো তারাই করছেন কি না- এগুলো তদন্তের বিষয় রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ফেসবুক অথরিটির সঙ্গে আমাদের মাঝে মাঝেই বসা হচ্ছে। ফেসবুক আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছে, তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। আমরা সবসময় যে সহযোগিতা পাই সেটা আমরা বলব না। আমরা তাদের সবসময় জানাচ্ছি। যারা এই অপপ্রচার করছেন তাদের আইডি সম্পর্কে আমরা জিজ্ঞাসা করছি। তাদের ডিটেইল আমরা চাচ্ছি। এই ধরনের অপপ্রচার যাতে বন্ধ হয় সেই বিষয়ে ব্যবস্থা করার জন্য বলছি। ওনারা মাঝে মাঝে করছেন কিংবা করলে আবার দেখি নতুন আইডির মাধ্যমে তারা আবার করছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এগুলো কীভাবে বন্ধ করা যায়- সেই বিষয়ে আমাদের বিশেষজ্ঞরা যারা এই বিষয়ে কাজ করছেন। তারা এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেছন। আমরা ফেসবুকের সঙ্গে প্রায়াই বসে থাকি। আবারও আমরা প্রয়োজনে বসব।

নারী নির্র্যাতন নারী নির্যাতনের ঘটনায় বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ হয় না, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ কেবিনেট বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে নারী নির্যাতন আইনে আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি। নারী নির্যাতনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডাদেশের জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। আপনারা জানেন সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতন বেড়ে যচ্ছে, কয়েকটি ঘটনা সবার চোখে পড়ছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডাদেশের সিদ্ধান্তটি এসেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিচারের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নয়।আমাদের বিচার বিভাগ স্বধীন। বিচার সুষ্ঠু হওয়ার জন্য যা করা প্রয়োজন করছি। পুলিশি তদন্তসহ সকল বিষয়ে নজর রাখছি। প্রয়োজনে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তদন্ত নিরপে¶ করতে যা দরকার করছি, করব। বিচার তো আমাদের হাতে নয়, আদালত বিচারের সিদ্ধান্ত নেবে। তারাও কিন্তু দ্রুত বিচারের বিষয়টি বলেছেন।

এসিড নিক্ষেপ তিনি আরও বলেন, এসিড নিক্ষেপ নিয়মিত ঘটনা হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু যখন এর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হলো এবং তার কয়েকটি রায় কার্যকর হওয়ার পর এটি কমে গেছে। এখন নারী নির্যাতনের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি করা হয়েছে। আমরা আশা করি এটিও কমে যাবে। তবে কোনো অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না হলে খবর পেলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পুলিশের দক্ষতা সক্ষমতা বাড়াতে পিবিআই, সিআইডি তৈরি করেছি। পুলিশ না পারলে তাদের তদন্তের দায়িত্ব দিচ্ছি। ৩০ বছর আগে এক ধরনের তদন্ত হয়েছে, পিবিআই তদন্ত করে আবার নতুন করে তথ্য বের করেছে। মানুষ যাতে সঠিক বিচার পান সেজন্য উন্নত দেশের সাথে সুশাসন নিশ্চিত করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here