রাব্বুল ইসলাম, ঝিনাইদহঃ নির্মাণের সাত দিনের মাথায় উঠে গেছে ১৯ কোটি টাকার রাস্তা। ২২ কিলোমিটার রাস্তার মাত্র তিন কিলোমিটার শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে তা উঠে গেছে। এছাড়া অনেক স্থানে ফেটে গেছে। নীম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাস্তার কাজ করায় এমনটি হয়েছে বলছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানায়। যদিও ঠিকাদারের দাবি, বৃষ্টির মধ্যে অল্প কিছু অংশে রাস্তার কাজ করার কারণে এমন হয়েছে। তবে রাস্তা তৈরির তিন বছরের মধ্যে কোন ক্ষতি হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা ঠিক করে দেবেন বলে উল্লেখ করছেন ঠিকাদার।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকো গান্না হয়ে ডাকবাংলা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা মজবুতিসহ ওয়ারিং এর কাজ চলছে তিন বছর ধরে। এক সপ্তাহ আগে কালীগঞ্জ নীমতলা বাস স্টান্ড থেকে পাকাকরণের জন্য কার্পেটিং বা বিচিকরণের কাজ শুরু করে। ৪ থেকে ৫ দিনে তিন কিলোমিটর কাজ সম্পন করে। এরপর বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রাখেন। কিন্তু এরই মধ্যে সড়কের শ্রীরামপুর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশে রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে গেছে। কোথাও বড় বড় ফাটলের সৃৃষ্টি হয়েছে। এভাবে থাকলে কয়েক মাসের মধ্যে তা সম্পূর্ণ উঠে যাবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
টেন্ডারে রাস্তার কাজ পান খুলনার মুজাহার ইন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি টাকা। কিন্তু হাত বদল হয়ে রাস্তার কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম মিয়া। টেন্ডার শেষে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। রাস্তা খাড়া এবং ইট বালুর কাজ শেষ হয়েছে ছয় মাস আগেই। এরপর সম্প্রতি শুরু করেছে কার্পেটিং এর কাজ।
সড়কটির কাজ দেখাশোনার দ্বায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী আনোয়ার হাসান জানান, নীম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারনে এমনটি হয়েছে। তবে সিডিউল অনুযায়ী সড়ক কাজ সম্পনের তিন বছরের মধ্যে কোন সমস্যা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুন:মেরামত করবেন। বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে রাস্তার সমস্যা হয়েছে। তবে কাজ শুরু হলে আগে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের কাজ করা হবে।
এদিকে কাজের ঠিকাদার মিজানুর রহমান ওরফে মাসুম মিয়া রাস্তার কাজে কোনো নীম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে না দাবি করে জানান, যেখানে রাস্তা উঠে যাচ্ছে, সেখানে টিউবওয়েলের পানি যায়। যার কারনে এমন হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির দিনে কাজ করায় ৩০০ মিটার মত রাস্তার সমস্যা হয়েছে। আমি লোক পাঠিয়েছি সেখানকার কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তা পুনরায় করা হবে বলে জানান স্থানীয় এই ঠিকাদার।
ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দারের সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে বার বার কল দিলে ফোন রিসিভ করেননি। পরে পরিচয় জানিয়ে ক্ষুদ বার্তা দিলেও ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি তার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
