খবর৭১ঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলাকারী দু’জন কম বয়সী বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাসভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দুজনের উপস্থিতির বিষয়টি দেখা গেলেও তাদের চেহারা অস্পষ্ট। তাদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত এবং গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউএনও ওয়াহিদার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ আসেন প্রতিমন্ত্রী। ইউএনওর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বাসার সামনের সিসিটিভি ফুটেজে হালকা গড়নের কম বয়সী দুজনকে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে তাদের চেহারা অস্পষ্ট, চেনা যাচ্ছে না। তারা ইউএনওকে হাতুড়ি জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করেছে বলে মনে হচ্ছে।’ জড়িতদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশ সুপার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আশা করছি, দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার সম্ভব হবে। ক্লু পেতে কাজ করছেন তারা।’
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাধীন ওয়াহিদা খানমের সেন্স আছে এবং স্পষ্ট কথা বলতে পারছেন। তিনি হামলাকারী কাউকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে কারও সঙ্গে কোনো ধরনের শত্রুতা ছিল না। এখন পর্যন্ত হামলার কারণটি অস্পষ্ট। তদন্ত চলছে, হামলাকারীদের বের করার চেষ্টা চলছে।’
ইউএনওর শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘স্বাস্থ্যগত অনেক প্যারামিটার ইমপ্রুভ করলেও ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে আউট অব ডেঞ্জার বলা যাচ্ছে না। কারণ নিউরো রোগীর ক্ষেত্রে পুরোপুরি সব কিছু বলা যায় না। তাকে আপাতত বিদেশ নেয়ার পরিকল্পনা নেই। তবে প্রয়োজন হলে আমরা সবটাই করব। তবে আমাদের রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসা বিশ্বমানের। এখানে ব্লাডের ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রয়োজনে সিনিয়র নিউরো চিকিৎসকদের সহযোগিতা নেয়া হবে।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্স এন্ড হসপিটাল এর পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা সরকারি আবাসিক ভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় চিৎকারে তার সঙ্গে থাকা বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে অন্য কোয়ার্টারের বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
এ সময় তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুরে পাঠানো হয়। ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে রংপুর ডক্টরস ক্লিনিকে আইসিইউতে ও তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওয়াহিদা খানমকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়।