খবর৭১ঃ
আকাশপথে পরিবহনের সময় দুর্ঘটনায় যাত্রী আহত বা নিহত হলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আগামীতে ছয়গুণ বাড়বে। এমন বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল-২০২০’ পাসের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, তানভীর ইমাম, শেখ তন্ময় ও সৈয়দা রুবিনা আক্তারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংসদের আগামী অধিবেশনে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। এছাড়া বৈঠকে করোনাকালীন পর্যটন কর্পোরেশনের অধীনে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করে এমন কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত হওয়া বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, কনভেনশনের আলোকে নতুন আইন না হওয়ায় কোনো দুর্ঘটনার জন্য প্রচলিত আইনে প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ খুবই কম এবং তা আদায়ের পদ্ধতিও বেশ অস্পষ্ট, সময়সাপেক্ষ ও জটিল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আকাশপথে চলাচলকারী যাত্রীর অধিকার সুরক্ষা ও মালপত্র পরিবহন সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি মৃত্যু হওয়ার কারণে যাত্রীর পরিবারকে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ প্রায় ছয়গুণ বৃদ্ধি ও আদায় পদ্ধতি সহজ করা প্রয়োজন।
প্রস্তাবিত আইনটি পাস হলে আকাশপথে যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাত এবং ব্যাগেজ ও কার্গোর ক্ষতি বা হারানোর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের হার আগের তুলনায় বাড়বে। আগে মৃত্যু বা আঘাতজনিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারিত ছিল আড়াই লাখ ফ্রাঙ্ক বা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। বিলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৪ ডলার বা ১ কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা। নতুন আইনে ফ্লাইট বিলম্বের কারণে পরিবহনকারীর দায় ২০ ডলারের পরিবর্তে ৫ হাজার ৭৩৪ ডলার, ব্যাগেজ বিনষ্ট বা হারানোর জন্য প্রতি কেজিতে ২০ ডলারের পরিবর্তে ১ হাজার ৩৮১ ডলার এবং কার্গো উড়োজাহাজের মালামাল বিনষ্ট বা হারানোর জন্য প্রতি কেজিতে ২০ ডলারের পরিবর্তে ২৪ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন আইনের বিধানের ভিত্তিতে যাত্রীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে তার বৈধ উত্তরাধিকারীদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্থ ভাগ করা যাবে। সংশ্লিষ্ট উড়োজাহাজ পক্ষ বা বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে অথবা আদালতের মাধ্যমে এ ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে।