খবর৭১ঃ
মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সাবেক ও সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. রণজিৎ কুমার গংয়ের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীসহ হুমকি-ধমকি ও হয়রানীর অভিযোগে পৃথকভাবে আদালতে দুটি মামলা হয়েছে। আজ বৃহম্পতিবার দুপুরে সৈয়দপুরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদি ডক্টরস্ হসপিটাল এন্ড কার্ডিকেয়ার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেন তাহমিদ ইমাম।
শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কে অবস্থিত ডক্টরস্ হসপিটাল এন্ড কার্ডিকেয়ার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেন তাহমিদ ইমাম লিখিত বক্তব্য বলেন। বক্তব্যে বলা হয়, সৈয়দপুর শহরস্থ ডক্টরস হসপিটাল এন্ড কার্ডিকেয়ার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সুনামের সঙ্গে এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছে। কিন্তু এলাকার একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অভিনব কায়দায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। ওই প্রতারক চক্রের সদস্য মোছা. মাহমুদা সুলতানা সুমিকে ব্যবহার করে চক্রটি বিভিন্ন সহজ সরল যুবককে ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন সময় বিয়ের নামে কাবিননামা তৈরি, পরবতীতে তালাক প্রদানের মাধ্যমে দেনমোহরের অর্থ আদায় ও বিভিন্নজনের নামে বিভিন্ন মিথ্যে অভিযোগের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। সর্বশেষ গত ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর ডক্টরস হসপিটালের বিরুদ্ধে ওই প্রতারক চক্র মাহমুদা বেগম সুমির প্রসবকালীণ সময়ে শিশু হত্যার বিষয়ে একটি মিথ্যা অভিযোগ নীলফামারী সিভিল সার্জন অফিসসহ বিভিন্ন অফিসে করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এটি তখন নীলফামারী জেলার দায়িত্বে থাকা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. রণজিৎ কুমার বর্মণের যোগসাজসে করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে প্রতারক চক্রটি ডা. রনজিৎ কুমার বর্মণের ইন্ধনে অভিযোগের বিষয়ে ডক্টরস হসপিটালের পরিচালকের কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই চাঁদার টাকা আদায়ের জন্য চক্রটি হসপিটালের পরিচালকের ওপর নানাভাবে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, প্রতারক চক্রের সদস্য নীলফামারীর সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. রণজিৎ কুমার বর্মণ চাঁদার টাকা না পেয়ে বার বার ডক্টরস হসপিটালের বিরুদ্ধে হাস্যকর অভিযোগ তুলে অবৈধ ও অনৈতিক উপায়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধে করে দেওয়ার অপকৌশল গ্রহন করেন। তাঁর যড়যন্ত্রের কারণে ওই হাসপাতালে প্রায় ৩০ বার তদন্ত হয়েছে। প্রতিবারই তদন্ত দলের সদস্যরা অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল খুঁজে পায়নি। হসপিটালের পরিচালক সিভিল সার্জনের ষড়যন্ত্র কঠোরভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে হোসেন তাহমিদ ইমাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন তারপরও ডা. রণজিৎ কুমার বর্মণ হীনকার্য চরিতার্থ করতে না পেরে তাঁর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার অপচেষ্টা অব্যাহত রাখেন।
এ অবস্থায় ডক্টরস হসপিটাল পরিচালক হোসেন তাহমিদ ইমাম প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট নীলফামারী সৈয়দপুর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে এবং ১৮ আগস্ট নীলফামারীর সৈয়দপুর আমলি আদালতে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে নীলফামারীর সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. রণজিৎ কুমার বর্মণসহ প্রতারক চক্রের বেশ কয়েকজন আসামী করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়। গত ৫ আগস্ট বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা হয় যার নং-(অন্য ৪৩/২০২০)। অপরদিকে গত ১৮ আগস্ট বিজ্ঞ আমলী আদালত সৈয়দপুর নীলফামারীতে আরও একটি মামলা হয়। (যার নং পি৭১/২০২০)। দুটি মামলায় বিবাদী ভুক্ত করা হয়েছে সাবেক সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মন, এইচ এম নুরুন নবী চৌধুরী, সালেহা বেগম ও মাহমুদা সুলতানা সুমিকে।
এছাড়া আরও কয়েকজনকে বিবাদী ও মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে। বর্তমানে উক্ত মামলা দুইটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ডক্টরস্ হসপিটাল ও কার্ডিকেয়ার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারের তত্বাবধায়ক ডা. মো.নজিবুর রহমান বুলবুলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।