খবর৭১ঃ মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধ আকাশ যোগাযোগ পুনরায় চালু করতে চায় ভারত। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশও যত দ্রুত সম্ভব এটি চালু করতে একমত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে যান ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস।
সাক্ষাতে ভারতের হাইকমিশনার করোনায় দেশটির সঙ্গে বন্ধ আকাশ যোগাযোগ চালুর বিষয়ে প্রস্তাব দেন। জবাবে প্রতিমন্ত্রী এটি চালুর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দিনকয়েক আগে হঠাৎ ঢাকা সফরে আসা ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধ আকাশ যোগাযোগ চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়। শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক শেষে পরাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, বৈঠকে বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত এয়ার বাবল চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এবং বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় আছে। আশা করছি, দ্রুত করে ফেলতে পারব।
প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে রীভা গাঙ্গুলী বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে কাজ করার বিষয়ে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান। জবাবে প্রতিমন্ত্রী এভিয়েশন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা উভয়ের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে বলে হাইকমিশনাকে অভিহিত করেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী করোনায় সৃষ্ট বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর জনগণের পারস্পরিক ভ্রমণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর জনগণের পারস্পরিক ভ্রমণের মাধ্যমে এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্প কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।’
ভারতের হা্কিমিশনার বাংলাদেশে অবস্থানকালে তার সুন্দরবন ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পর্যটনের অপার সম্ভাবনার একটি দেশ। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পর্যটন সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনাও প্রচুর। ভারতীয় অনুদানে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ির অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। তা সমাপ্তির পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশালসংখ্যক মানুষ তা দেখতে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবে।’
প্রতিমন্ত্রী ও হাইকমিশনারের সাক্ষাতে দুই দেশের সম্পর্কের অবস্থান নিয়েও আলোচনা হয়। বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় জনগণের অবদানের কথা বাংলাদেশ সবসময়ই কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দুই বন্ধু রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে আরও সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে।’
জবাবে ভারতীয় হাইকমিশনার দু্ই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হচ্ছে বলে মনে করেন। হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। দিন দিন এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হচ্ছে।’ এই শক্তিশালী সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন হাইকমিশনার।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে অবস্থানকালে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য বিদায়ী হাইকমিশনারকে প্রতিমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।