খবর৭১ঃ অনুমতি ছাড়া দেশের যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৭ আগস্ট আইনজীবী রফিকুল ইসলামের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান ও হাসান তারেক পলাশ এই রিট করেন। রিট আবেদনে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া দেশের কোনো সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালাতে পারবে না, বলে জারি করা নির্দেশনাটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। একইসঙ্গে রুল শুনানির সময় মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়।
পাশাপাশি মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতালে অভিযানের বিষয়ে যে টাস্কফোর্স গঠনের কথা বলা হয়েছে, সেখানে কারা কারা আছেন তাদের পরিচয় রিট আবেদনের আর্জিতে জানতে চাওয়া হয়।
পূর্বানুমতি ছাড়া দেশের যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা’র স্বাক্ষরে বিভাগ গত ৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি পাঠানো হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর দেশের সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান করছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান পরিচালনা করাতে হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এরইমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সার্বিক কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাও সদস্য হিসেবে আছেন। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা করা যাবে। এ অবস্থায় যেকোনো সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ রূপ অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা এবং জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সাথে সমন্বয়পূর্বক পরিচালনা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।