খবর৭১ঃ
শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোলঃ বেনাপোলে সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে পণ্য রপ্তানীবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজির মহোৎসবে মেতেছে ঝিকরগাছা ট্রাক — মটর শ্রমিক ইউনিয়নসহ কয়েকটি চক্র। যার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব না হওয়ায় শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ পত্র দিয়েছেন ঝিকরগাছ, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর ট্রাক — মালিক সমিতি। যশোর জেলা (ঝিকরগাছ, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর) ট্রাক ট্যাংকলরী (দাহ্য পদার্থ বহনকারী ব্যতীত) ট্রাক্টর ও কভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্র থেকে জানাযায়, বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল।
যে বন্দর বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বড় একটি অংশ্ এ বন্দরকে সর্বক্ষণ সচল রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারসহ স্থানীয় কয়েকটি সংগঠন সার্বক্ষণিক চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ হতে ভারতে রপ্তানীযোগ্য পণ্যবাহী ট্রাক হতে বেনাপোল চেকপোস্টে কিছু কথিত শ্রমিক নামধারী সন্ত্রাসীরা ট্রাক প্রতি ১৬০/২০০ টাকা কওে প্রকাশ্যে চাঁদাসহ পণ্যবাহী ট্রাকের সিরিয়াল আগে পাইয়ে দিতে ট্রাক প্রতি ১৫০০/২০০০ টাকা আদায় করছে, যা আইনগত অপরাধযোগ্য। গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার যখন পরিবহন হতে চাঁদা আদায় বন্ধ করছেন, তখন বেনাপোল চেকপোস্টে সন্ত্রাসী কর্তৃক পণ্যবাহী ট্রাক হতে নির্বিঘেœ চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। যা বন্ধ অতীব জরুরী। অন্যথায় যেকোন সময়ে বেনাপোল চেকপোস্টে আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে মর্মে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এ মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে বেনাপোল বন্দরের আমদানি গেট এলাকায় গিয়ে জানাযায়, যশোর জেলা (ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর) ট্রাক ট্যাংকলরী(দাহ্য পদার্থ ব্যতীত) ট্রাক্টও ও কভার্ডভ্যান মটর শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক প্রত্যেক রপ্তানী পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ১’শ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।
সেসাথে ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমসের নাম করে চাঁদা নিচ্ছে ৫০ টাকা। সর্ব সাকূল্যে তারা ট্রাক প্রতি আদায় করছে ১৫০ টাকা। এছাড়া আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন রপ্তানীমুখী ট্রাক ড্রাইভাররা। এসময় ই¯্রাফিল নামে এক ট্রাক ড্রাইভার এ প্রতিবেদককে জানান, সরকার ট্রাক থেকে চাঁদা নিতে নিষেধ করলেও বেনাপোলের কয়েকটি সিন্ডিকেট রপ্তানীবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা কিছুতেই চাঁদা না নিয়ে ভারতে ট্রাক প্রবেশ করতে দেয় না। তিনি আরো বলেন, ঝিকরগাছা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নামে বেনাপোলের সহিদুল ও কান ফুটানো আলমগীরসহ কতিপয় ব্যক্তি রপ্তানী টট্রক থেকে ১০০ টাকা ও ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমসের জন্য ৫০ টাকা চাঁদাসহ ১৫০ টাকা নিয়ে থাকে। আজকেও তিনি ১৫০ টাকা চাঁদা দিয়ে রপ্তানী গেটে প্রবেশ করেছেন বলে জানান। যশোর জেলা (ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর) ট্রাক ট্যাংকলরী(দাহ্য পদার্থ ব্যতীত) ট্রাক্টর ও কভার্ডভ্যান মটর শ্রমিক ইউনিয়নের বেনাপোল শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বিষয়টির সত্যতা প্রকাশ করে বলেন প্রতিদিন এ রপ্তানী গেট দিয়ে ৮০/১০০ ট্রাক পণ্য ভারতে যাতায়াত করে থাকে। সেখানে বিশাল এ সংগঠনের বেকার সদস্যদের স্বার্থে গত বৃহস্পতিবার থেকে তারা ট্রাক প্রতি ১০০ করে নিচ্ছেন।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মামুন খান বলেন বিষয়টি তিনি শুনেছেন এবং আইনানানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রপ্তানীমুখী ট্রাক ড্রাইভারদের কাছে চাঁদার সত্যতা যাচাই করেছেন। কিন্তু কোনও ড্রাইভার মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় চাঁদাবাজদের বিররুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে। শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূলক কুমার মন্ডল বলেন, বিষয়টি যাচাই করে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, যশোর জেলা (ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর) ট্রাক ট্যাংকলরী(দাহ্য পদার্থ ব্যতীত) ট্রাক্টর ও কভার্ডভ্যান মটর শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে কতিপয় ট্রাক চালক জানান, তাদেরকে বাধ্যতামূলক এ ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে, নইলে তাদেরকে ঝিকরগাছার উপর দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে যেতে দেওয়া হবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছেন উক্ত মটর শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ।