মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ সৈয়দপুরে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও অনলাইন পত্রিকা দৈনিক তৃতীয় মাত্রায় সৈয়দপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক দিলনেওয়াজ খান ও তাঁর প্রয়াত পিতাকে জড়িয়ে আপত্তিকর ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ। আজ রোববার দুপুরে শহরের মর্তুজা মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তব্য বলেন সৈয়দপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দিলনেওয়াজ খান।
আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্যে দিলনেওয়াজ খান বলেন, আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছি। রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানেও সৈয়দপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়কের দায়িত্ব পালনসহ আওয়ামীলীগের সাথে সম্পৃক্ত থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচী সফল করতে নিরলসভাবে কাজ করেছি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এজন্যই স্থানীয় আওয়ামী পরিবারের কয়েকজন নেতাকর্মী আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুন্ন করতে প্রায়ই আমাকে রাজাকারের সন্তান আখ্যায়িত করে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার প্রয়াত পিতা নাঈম খানকে জড়িয়ে পার্বতীপুর ও সৈয়দপুরে অসংখ্য হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের বানোয়াট ও মিথ্যে অভিযোগ এনে আমার মরহুম পিতার সম্মান হানীসহ আমার এবং আমার পরিবারের সামাজিক সুনাম ক্ষুন্ন অপচেস্টায় মেতেছে। তিনি বলেন, এমন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই চলতি বছরের ৮ জুন সৈয়দপুর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন দলীয় প্যাডে লিখিতভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে একটি মিথ্যে ও বানোয়াট অভিযোগ পাঠান। এছাড়া গত ১১ আগস্ট ‘দৈনিক তৃতীয় মাত্রা’ পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে তার নিজস্ব ভিডিও সাক্ষাৎকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছেন। যা সামাজিক ও পারিবারিক এবং রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে মনগড়াভাবে করা হয়েছে দাবি করেন তিনি বলেন জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত রাজাকারের কোন তালিকাতেই আমার বাবার নাম নেই। জাতীয়ভাবে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় ( সৈয়দপুর অংশে ক্রমিক নং ২০ ও ৭০) এবং স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত তালিকায় (ক্রমিক নং ১৯) এ নাইম উদ্দিন কাজী, পিতা- সালিম উদ্দিন এর নাম অন্তর্ভূক্ত। উক্ত রাজাকারের নামের সাথে আমার পিতা মো: নাইম খানের নাম মিলিয়ে সৈয়দপুরে আমার রাজনৈতিক,পারিবারিক ও সামাজিক সুনাম ক্ষুন্নের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। তারাই এখন নতুন করে ১৯৭১ সালে সৈয়দপুরে সংঘটিত ৪৫০ জন হিন্দু মারোয়ারী গণহত্যার (ট্রেন ট্রাজেডি) সাথে আমার পিতাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যা মিথ্যে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন আমার বাবা কখনই যুদ্ধাপরাধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন না। তিনি বলেন মহসিনুল হক মহসিন যুবলীগের পদ হারানোর পর থেকে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন।দিলনেওয়াজ খান বলেন, আমি আমার কর্মদক্ষতা, সততার কারনে ছাত্রলীগের সভাপতি ও যুবলীগের আহবায়ক হতে পেরেছি।
তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচন এলেই অবাঙ্গালী-রাজাকার ইস্যু তুলে আওয়ামীলীগের ক্ষতি করার চেস্টায় ব্যস্ত থাকে তারা। এবারও তাই করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যুবলীগের আহবায়ক দিলনেওয়াজ খান বলেন আমি অবাঙ্গালী এবং দল ও সমাজে আমার জনপ্রিয়তায় ক্ষুব্ধ হয়ে বরাবরের মত এবারও ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়েছে।এজন্য দল ও পরিবারের সাথে পরামর্শ করে আইনী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য বলেন নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন,সৈয়দপুর পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, পৌর আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জোবায়দুর রহমান শাহীন।
বক্তারা বলেন নির্বাচন এলেই যাতে আওয়ামীলীগের ভোট অন্য পক্ষে চলে যায় সে জন্য শুরু হয় ষড়যন্ত্র। এবারও তাই হচ্ছে। যেমন হয়েছিল বিগত নির্বাচনগুলোতে। অবাঙ্গালীদের বিপক্ষে কথা বলে নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে জয়ী করাতে অবাঙ্গালীদের আওয়ামীলীগ থেকে বিমুখ করতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন। তারা বলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন কতটা স্বচ্ছ তা সৈয়দপুরবাসী ভাল করেই জানে। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক যথাক্রমে মো. আসাদুল ইসলাম আসাদ, মোস্তফা ফিরোজ,আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর শেখ মোহন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর, সেকেন্দার আলী,মুস্তাফিজ আলী, কৃষিবীদ এম এ মুবিন, বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক আব্দুল হাফিজ হাপ্পু, বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল হেলাল চৌধুরী, পৌর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শিফাত সরকার,পৌর কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক আবু হেনা মহসিন পুলক,কৃষকলীগ নেতা বিপ্লব, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে গোলাম রুবায়েদ মিন্টু ও নাজির হোসেন, সৈয়দপুর কলেজের সাবেক ভিপি আব্দুস সবুর আলম সাবেক ছাত্রনেতা সুমন আরিফুর আনোয়ার, শেখ সোহাগ, মনু খান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম রয়েল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক ইমরান খান নাদিম, যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম বিদ্যুৎ, মহিউদ্দিন রিপন, স. ম. সাঈদ রেজা, গোলজার হোসেনসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ।