খবর৭১ঃ ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির মামলায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এর মধ্যে দিয়ে মামলাটির আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হলো।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৮ আগস্ট তারিখ ঠিক করেন আদালত।
চার্জগঠনের শুনানির জন্য আজ কারাগার থেকে বাবুল চিশতিকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা অপর দুই আসামি এ কে এম শামীম ও গাজী সালাহউদ্দিনও আদালতে হাজির হন। উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করে চার্জগঠনের পক্ষে শুনানি করা হয়। অপর আট আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
সিনহা ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন— ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ তদন্তকালে মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
গত ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১-এ এই মামলাটি করেন। গত বছর ৯ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ এ চার্জশিট দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে ৪ কোটি টাকা ভুয়া ঋণ তৈরি করে তা একই দিনে পে-অর্ডারের মাধ্যমে আসামি এসকে সিনহার ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন। পরে এসকে সিনহা নগদ, চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়ে নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এর আগে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা লেনদেনের ঘটনায় জালিয়াতির প্রমাণের কথা জানিয়েছিলেন দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এ বিষয়ে ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি কে এম শামীমসহ ছয় কর্মকর্তা এবং মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা স্থানান্তরের বিষয়টি স্বীকার করেন।