খবর৭১ঃ মিরসরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহি একটি বিদ্যালযের নাম অলিনগর লায়লা বেগম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। উপজেলার ১ নম্বর করেরহাট ইউনিয়নের সবুজ শ্যামল নিবিড় পল্লী অলিনগরে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ৫ দশক ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এই জনপদে নিরক্ষরতার অন্ধকার দূর করে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। ৪ যুগেরও বেশি সময় ধরে এই বিদ্যালয়ের সভাপতির পদে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তম্মধ্যে অন্যতম মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পশ্চিম অলিনগর বায়তুর রহমান বড় জামে মসজিদের সভাপতি হাজ্বী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন। তিনি ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের সভাপতির পদে আসীন হন। দায়িত্ব পাওয়ার শুরু থেকেই তিনি বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নসহ নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন তিনি।
এছাড়া তিনি নিজ প্রচেষ্টায় স্থানীয় সংসদ সদস্য, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সমাজের বিত্তবান, সরকারি অনুদান, বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ড, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের অনুদান, তার ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ মোট ৩০ লক্ষাধিক টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড সস্পন্ন করেছেন। উন্নয়ন কর্মকান্ডের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে মুজিব কর্ণার স্থাপন, সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্যবর্ধন, বিজ্ঞানাগার উন্নয়ন, ছাত্রাবাস তৈরি। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের উর্ধ্বমুখী ভবনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন একটি ডিও লেটার দিয়েছেন। এছাড়া দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
অলিনগর লায়লা বেগম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হাজ্বী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জানান, মিরসরাইয়ের মাটি ও মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন ৭ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে, আজকে উনার অনুপ্রেরণায় এ স্কুলের উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করি। উনার সহযোগিতায় আমি স্কুলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করি ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি আমার এলাকার কৃতি সন্তান যার প্রচেষ্টায় স্কুল প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন সেই মহান ব্যক্তি সাবেক এমপি ওবায়দুল হক খোন্দকারের প্রতি। আমি এই স্কুলের দায়িত্ব নেয়ার পর যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা প্রসারের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ মনে করেছি সে ব্যাপারে স্থানীয় এমপি মহোদয়ের সহযোগিতা কিছু বরাদ্দ নিয়ে স্কুলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় স্কুলের পরিবেশ দৃষ্টিনন্দন রং করা এবং ছেলে মেয়েদের পাঠদানে মনোযোগী হওয়ার জন্য ক্লাসরুমের মানোন্নয়ন, আসবাবপত্র ক্রয়, প্রতিটি ক্লাসের ফ্যান লাগানো, বিজ্ঞানাগারের উন্নয়নের জন্য এমপি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করলে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার সামগ্রীর ব্যবস্থা করেন। স্কুল আঙ্গিনায় মনোমুগ্ধকর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ফুলের বাগান, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ওবায়দুল খোন্দকারের মেয়ের সহযোগিতা সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসি। বর্তমানে ১২০ ফুট লম্বা শেখ আহম্মদ মজুমদার ছাত্রাবাসের উন্নয়ন কাজ চলছে যার নির্মাণ কাজ খুব শীঘ্রই শেষ হবে বলে আমি আশাবাদী।
মেয়েদের এবাদত খানার জন্য একটা রুম নির্মাণ করা হয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাইক্লোন শেল্টার কাম-স্কুলের জন্য একটি ভবনের চুক্তি প্রস্তাবনা এসেছে, চুক্তি সম্পাদন করেছে আমাদের প্রধান শিক্ষক চার বছরের মধ্যে ভবনটি নির্মিত হবে, প্রাণপ্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আরেকটি ঊর্ধ্বমুখী ভবনের জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন, সেটাও আমরা আশা করতেছি দ্রুত পাব। আমার দায়িত্বপালনকালীন দুই বছরের মধ্যে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার মান খুবই ভালো ছিল, আমি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এছাড়া স্টাফ কর্মচারী তারা যে পরিশ্রম করতেছে, আমি সকল শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তারা খুব নিষ্ঠার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আমাদের প্রধান শিক্ষক আন্তরিকতার সহিত কাজ করে যাচ্ছেন, আমাকে সহযোগিতা করছেন এবং আমি উনাকে কথা দিয়েছি শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু করেন, অবকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব আমি নিয়েছি।
আধুনিক টয়লেট নির্মাণ হতে যত কিছু করার দরকার সল্প সময়ের মধ্যে আমি তা করার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে যদি আবার কাজ করার সুযোগ পাই বাকি কাজগুলো করার চেষ্টা করবো। এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করি সাবেক সভাপতি শফি আহমেদ মেম্বার সার্বক্ষণিক আমার সাথে সহযোগিতা করেছেন, আমার সাথে থেকেছেন বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্পূর্ণভাবে সম্পৃক্ত থেকেছেন। উনি কখনো ১ মিনিটের জন্য দূরে যায় নাই আশা করি ভবিষ্যতেও থাকবে। স্কুল এমন একটি প্রতিষ্ঠান সেটি কারো ব্যক্তিগত সম্পদ না প্রতিষ্ঠানটি আমাদের এলাকার আমাদের অলিনগরের সবার সম্পদ সে হিসাবে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের মনোযোগ দেওয়া অতীব প্রয়োজনীয়।
অলিনগর লায়লা বেগম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষাক রতন কুমার দে জানান, ২০১৮ সালে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে এই এলাকার সুযোগ্য সন্তান হাজী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন সভাপতি পদে আসীন হন। তিনি সভাপতি হওয়ার পর যেসব উন্নয়ন হয়েছে তম্মধ্যে অন্যতম হলো সার্বিক লেখাপড়ার মান উন্নয়নে যথেষ্ট গতি পায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে আধুনিক শিক্ষার ধারক বাহক হিসেবে একটি সমৃদ্ধ বিজ্ঞানাগার, সিসি ক্যামেরা সম্বলিত মনিটরিং ব্যবস্থা শ্রেণি কক্ষে, বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম রিয়েলাইজেশন মাধ্যমে প্রাণবন্তকর শিক্ষা ব্যবস্থার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন।
বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দরও মনোরম করার জন্য বিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ রং করা বিদ্যালয়ের সামনে ফুলের বাগান করা, ১২০ ফুট দৈর্ঘ্য ছাত্রাবাস পূর্ণ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।