মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুত্রের অত্যাচারে অসহায় পিতার অভিযোগে মাদকসেবী অবাধ্য ছেলে সারোয়ার হুসেন আশিককে (২৫) ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও দুই শত টাকা অর্থদন্ড করেছেন ভ্রাম্যামান আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ ওই দন্ডাদেশ প্রদান করেন। থানায় দেওয়া অভিযোগে জানা গেছে, সৈয়দপুর শহরের নয়াবাজার এলাকার মো. নিজামুদ্দিনের পুত্র সারোয়ার হুসেন আশিক (২৫) এবং পুত্রবধূ রাফিয়া সুলতানা বর্ষা (২০)।
বাবা-মায়ের একজন অবাধ্য সন্তান সারোয়ার হুসেন আশিক এবং তারা স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মাদকসেবী। সে (আশিক) প্রায় সময় বাবা-মায়ের কাছে মাদক সেবনের জন্য টাকা দাবি করে নানা রকম চাপ প্রয়োগ করাসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন গত ২ আগষ্ট পুত্র আশিক ও পুত্রবধূ উভয়েই আবারও বাবা নিজামুদ্দিনের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে বসে। আর ওই টাকা নিয়ে ছেলে আশিক মাদকসেবন করবে বিষয়টি বাবা নিজামুদ্দিন বুঝতে পেরে তাকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে মাদকসেবী ছেলে সারোয়ার হুসেন আশিক বাবা ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এর এক পর্যায়ে সে মা-বাবা ও এক ভাইয়ের ওপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারে। এ সময় আশিক ও তাঁর স্ত্রী বর্ষা বাড়ির বাথরুমে থাকা ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ওয়াশিংমেশিন ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে মাদকসেবী আশিক তাঁর ভাই আফছার আলীর পাল্সার ১৫০ সিসি’র একটি মোটরসাইকেল ( নম্বর: নীলফামারী – ল- ১১-২০৯৪) নিয়ে সটকে পড়েন। এ ঘটনায় নিরূপায় হয়ে অসহায় বাবা মো. নিজামুদ্দিন তাঁর অবাধ্য ও মাদকসেবী ছেলে সারোয়ার হুসেন আশিক ও ছেলের বউ (পুত্রবধূ) রাফিয়া সুলতানা বর্ষার বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ অভিযোগে ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার সৈয়দপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. খালেদ ফিরোজ নয়নের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা বাবা-মায়ের অবাধ্য পুত্র মাদকসেবী সারোয়ার হুসেন আশিককে নয়াবাজার এলাকা থেকে মাদকসেবন অবস্থায় হাতেনাতে আটক করেন। পরে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে মাদকসেবনের দায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং দুই শত টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ।
মাদকসেবি সারোয়ার হুসেন আশিকের অসহায় পিতা নিজামুদ্দিন জানান, পু্ত্রকে সঠিক পথে অানতে অনেক চেস্টা করেছি। এমনকি বেশ কয়েকবার মাদক নিরাময় কেন্দ্রেও পাঠানো হয়েছে। এর আগে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছিল। তাঁরপরেও সে মাদকসেবন বন্ধ না করায় বাধ্য হয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। পরে পুলিশ ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন এমন অবাধ্য সন্তানের কারণে তাঁর পরিবারের সকলেই ছিলেন অতিষ্ঠ। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো.আতাউর রহমান ভ্রাম্যমান আদালতে মাদকসেবী সারোয়ার হুসেন আশিকের সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।