ফটিকছড়ি প্রতিনিধি ঃ বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ সম্পাদক, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন,আওয়ামী হিংস্র থাবায় গণতন্ত্র আজ ক্ষত-বিক্ষত। দখলদার আওয়ামী সরকারকে বিদায় দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
আজ সকালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির শাহনগরে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতা সারোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ডাঃ হোসেন, মাহবুবুল আলম, শফিউল আজম চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সাংবাদিক নুরুল ইসলাম রিপন, যুবদল নেতা আজম খান,বেলাল বিন নুর, নাসির উদ্দিন শিকদার, মফিজুর রহমান সুমন, হেলাল উদ্দিন, ছাত্রদল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সহ সভাপতি মোরশেদ হাজারী, মহসিন কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক ইয়াকুব সিফাত, যুগ্ম আহবায়ক শফিউল আলম শফি, ফটিকছড়ি ছাত্রদল নেতা মঈন উল্লাহ উজ্জল, ওসমান তাহের সম্রাট, হাবিব শিকদার রুবেল, ফটিকছড়ি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক আল মামুন,পৌর ছাত্রদল নেতা ইঞ্জিনিয়ার মুন্না,আকরাম চৌধুরী, শেখ মাহফুজ উল্লাহ,সায়মুনুল করিম,আবুল কালাম, মোঃ ইলিয়াস, মুহাম্মদ ইকবাল, রাব্বি কায়েম, শাহাবুদ্দিন, এনামুল হক, রহমত উল্লা, জামাল খান, মোহাম্মদ হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
জনাব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশে এমন নির্বাচন হতে হবে যেটি সবার অংশগ্রহণে সঠিক, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।দীর্ঘদিন মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেনা। ‘আওয়ামী লীগ মার্কা’ ক্ষমতা দখলের নির্বাচন আর জনগন চায় না। তাই নির্বাচনকালীন একটি সহায়ক সরকার দরকার। সহায়ক সরকার ছাড়া প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবেনা এদেশের মানুষ। তিনি বললেন,আগামী নির্বাচনে একতরফা খেলা হবে না । বিনা ভোটে সরকার গঠন করে গায়ের জোরে দেশ চালাতে দেয়া হবেনা। জনগন যাতে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি ও সরকার নির্বাচিত করতে পারে সেজন্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠনে সংলাপে বসা উচিত সরকারের। এটা সরকারের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে জনগন আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।
তিনি বলেন, আজকে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। এবং সেই নির্বাচন না কি সংবিধান অনুয়ায়ী হবে। প্রশ্ন হচ্ছে কোন সংবিধান? যে সংবিধান (আওয়ামী লীগ) নিজেদের স্বার্থেভেঙেচুরে, কেটে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলেছে সে সংবিধান!
তিনি বলেন, সংবিধানকে ইচ্ছেমতো কেটে তারা (আওয়ামী লীগ) মনগড়া কাগজ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, সরকার আমাদের নির্বাচন করতে বলছে- কিন্তু নির্বাচন কিভাবে করবে সেটা নিয়ে কথা বলছেনা। রেফারি ও লাইন্সম্যান সব তারা । তারা একতরফা ফাউল খেলে গোল দিয়ে যাবেন। আমরা জার্সি পড়ে দাঁড়িয়ে থাকবো এটাতো হতে পারেনা।
এভাবে কী খেলা হয় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, একতরফা খেলা হবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া নির্বাচন হবে না। সে জন্য আমরা বলেছি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে। কিন্তু কীভাবে হবে? সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দল গুলোর সাথে সংলাপ বসতে হবে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর নির্বাচনের পথ খুঁজে বের করতে হবে। বিএনপির এনেতা বলেন, পরিবর্তনের ঝোড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে। ক্ষুদ্ধ জনগণের অভিযাত্রায় প্রবল বন্যার স্রোতে ভেসে যাওয়ার ভয়েই নিজেদের হাতে ক্ষমতা রেখে নির্বাচন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার।
তিনি বলেন, এ আওয়ামীলীগই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিল।এখন ক্ষমতা দখল করে নিজেদের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাতিল করেছে। নিজেদের স্বার্থে, ইচ্ছা মাফিক সংবিধান বদল বা সংশোধন করেছে তারা। আমরা বরাবরই তাদের এ অপকর্মটির বিরোধীতা করেছে। কিন্তু জনমত তোয়াক্কা না করে তারা একতরফাভাবে সংবিধান থেকে নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। এখন তারা বিএনপিকে সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে।
তিনি বলেন,তারা এতো সংবিধানেত দোহাই দিচ্ছেন, সংবিধানে তো সব দলের সভা-সমাবেশ করার অধিকার আছে। বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলা আছে, কিন্তু সাংবিধানিক সেই বিধান তো সরকার মানছে না।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোড ম্যাপ প্রসঙ্গে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, নির্বাচনী রোড ম্যাপ দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন- আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। সিইসির বক্তব্য আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তেরই প্রকাশ ঘটিয়েছে। সবাই জানে এ নির্বাচন কমিশন সরকারের মদদপুষ্ট। এদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারেনা।
তিনি বলেন, সর্বজনমান্য নির্বাচনের জন্য যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকা দরকার বর্তমানে সে অবস্থা দেশে নেই। সিইসি বললেন,নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার আগে এ ব্যাপারে তিনি কিছুই করতে পারবেন না। তাহলে তিনি নির্বাচনের দেড় বছর আগেই রোড ম্যাপ ঘোষণা করলেন কেন?
শুধু দেশের মানুষ নয়, আন্তর্জাতিক নানা মহলও বলছে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব। অথচ সিইসি অবৈধ সরকারের সাফাই গাইছেন। এ নির্বাচন কমিশনতো দখলদার সরকারের ফসল। ৫ জানুয়ারির মত আবারো ক্ষমতা দখলের জন্য এদের নির্বাচন কমিশনে বসানো হয়েছে।