করোনায় আরও ৩৮ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ২৫২০

0
379
দেশে আবারও একদিনে অর্ধশত মৃত্যু, শনাক্ত ২৮৫৬

খবর৭১ঃ সংক্রামক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩৮ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট ২ হাজার ৮৭৪ জন মারা গেলেন। এ সময়ের মধ্যে নতুন শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫২০ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ২ লাখ ২১ হাজার ১৭৮ জন। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১১৪ জন।

শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৯ হাজার ৬১৫টি। পরীক্ষা হয়েছে ১০ হাজার ৪৪৬টি। এতে ২ হাজার ৫২০ জন শনাক্ত হন। গত ২ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। গত ১ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬টি নমুনা পরীক্ষার কথা জানানো হয়েছিল। এতে ৩ হাজার ৬৮২ জন শনাক্ত হন। আর গত ১৭ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৯২২জনের নমুনা সংগ্রহ করে ১৭ হাজার ৫২৭টির পরীক্ষায় ৪ হাজার ৪ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরই এখন বাংলাদেশ। উৎসস্থল চীনকে ছাড়িয়েছে এ তিনটি দেশই। দেশে ১১ লাখ ১ হাজার ৪৮০ জনের করোনা পরীক্ষা করে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ২ লাখ ২১ হাজার ১৭৮ জন। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ফ্রান্স ও কানাডাকে পেছনে ফেলে ১৭তম। আর এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এর আগে রয়েছে ভারত, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরব।

দেশে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। প্রতিদিনই সুস্থ হয়ে উঠছেন বিপুল মানুষ। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১১৪ জন। এ পর্যন্ত ১ লাখ ২২ হাজার ৯০ জন মানুষ সুস্থ হলেন।

এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৮ জন মারা গেছেন বলে জানান নাসিমা। এর আগে ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ২ হাজার ৮৭৪ জনের। এ পর্যন্ত ২ হাজার ২৬৬ জন পুরুষ ও ৬০৮ জন নারী করোনায় মারা গেছেন।

ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জিংক-ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে। তবে, এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার প্রতি বিশেষ আহ্বান জানানো হয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। এখন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভিত্তিক লকডাউন চলছে। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here