প্রথম দফা বন্যায় ফসলের ক্ষতি ৩৪৯ কোটি টাকা

0
394
ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার বাড়ছে বগুড়ায় যমুনার পানি
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ
প্রথম দফা বন্যায় প্রাথমিকভাবে ৩৪৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আর এ পর্যন্ত ক্ষতির শিকার হয়েছেন ৩ লাখ ৪৪ হাজার প্রান্তিক কৃষক।

বন্যা পরিস্থিতির আর অবনতি না হলে কৃষি মন্ত্রণালয় যেসব কর্মসূচি নিয়েছে তাতে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যাবে। এমনকি আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক।

সোমবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি ও তা উত্তরণে করণীয় বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভা সঞ্চালনা করেন কৃষিসচিব মো. নাসিরুজ্জামান। সোমবার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ড. রাজ্জাক বলেন, এ সময়ে কর্মকর্তাদের অত্যন্ত তৎপর ও সক্রিয় থাকতে হবে। বন্যার কারণে এ সময়ের কৃষি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিতে কৃষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। পর্যাপ্ত বীজ মজুদ রয়েছে। এসব বীজ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে দ্রুত নতুন বীজতলা তৈরি করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বন্যার ক্ষতি মোকাবেলায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এগুলো হল- ক. অধিক ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমূহে কৃষকের জমিতে প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ টাকার কমিউনিটি ভিত্তিক রোপা আমন ধানের চারা উৎপাদন করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। খ. প্রায় ৭০ লাখ টাকার ভাসমান বেডে রোপা আমন ধানের চারা উৎপাদন করা হবে। গ. ৫৪ লাখ টাকার মাধ্যমে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টের মাধ্যমে রোপণের জন্য ট্রেতে নাবী জাতের আমন ধানের চারা উৎপাদন ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং ঘ. ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমন চাষ সম্ভব না হলে ৫০ হাজার কৃষকের মাঝে প্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার মাষকলাই বীজ ও সার দেয়া হবে।

সভায় জানানো হয়, প্রথমপর্যায়ে ২৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত অতিবৃষ্টি, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যায় রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, জামালপুর, নেত্রকোনা, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল জেলাসহ মোট ১৪টি জেলায় ১১টি ফসলের প্রায় ৭৬ হাজার ২১০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়। যার মধ্যে ৪১ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টাকার অঙ্কে এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকা। মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার। দ্বিতীয় পর্যায় ১১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, নাটোর, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, শেরপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ মোট ২৬টি (আগের ১৪টিসহ) জেলায় ১৩টি ফসলের প্রায় ৮৩ হাজার হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ এখনও নিরূপণ হয়নি।

এ অনলাইন সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান অপু, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) মো. মাহবুবুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) ড. মো. আবদুর রউফ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, বিএডিসির চেয়ারম্যান সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বন্যা উপদ্রুত অঞ্চল ও জেলাগুলোর কৃষি কর্মকর্তারা এ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here