খবর৭১ঃ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবারও ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচলকারী লঞ্চগুলোতে অগ্রিম কেবিন বুকিংয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এখনো যাত্রীদের মধ্যে এ কার্যক্রমের প্রতি তেমন সাড়া নেই।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববার সকাল ১০টা থেকে ঈদ উপলক্ষে কেবিনের আগাম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকায় লঞ্চগুলোর টিকিট বিক্রির কাউন্টারগুলোতে একযোগে শুরু হয় অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম। তবে এবার কোনো লঞ্চেই অন্যান্য বছরের মতো অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য আগাম স্লিপ জমা নিয়ে লটারির ব্যবস্থা করা হয়নি। এবার আগে এলে আগে পাবেন, এই ভিত্তিতে লঞ্চের কেবিন ও সোফার টিকিট দিচ্ছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণির অর্থাৎ ডেকের যাত্রীদের টিকিট প্রতিবারের মতো লঞ্চে উঠেই পাওয়া যাবে।
অগ্রিম টিকিট নিতে আসা যাত্রীর কয়েকজন জানান, আগে ঈদের সময়ে কেবিনের টিকিট ছিল সোনার হরিণের মতো। একটি টিকিটের জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতো। ভাড়ার দ্বিগুণ দিলেও একটি টিকিট মিলত না। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। কাউন্টারগুলোতে কোনো ভিড় নেই। চাইলেই যে কেউ লঞ্চের অগ্রিম কেবিনের টিকিট পেতে পারে। কাউন্টারগুলো অনেকটাই ফাঁকা। এ জন্য ঈদ উপলক্ষে বুকিং দিতে এসে সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট মিলে যাচ্ছে। এতে খুশি যাত্রীরা।
সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির বরিশাল কাউন্টারের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর কয়েক মাসে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে যাত্রীদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তার ওপর এবার ঈদে যাত্রীদের যাতায়াতের ইচ্ছাও কম। তাই অগ্রিম টিকিটের চাহিদা নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুনঃ ঈদের আগে ভয়ঙ্কর বন্যার শঙ্কা
কীর্তনখোলা লঞ্চ কোম্পানির ব্যবস্থাপক বেল্লাল হোসেন বলেন, এবার আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ঈদে লঞ্চের কেবিনের টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন তাঁরা। যতক্ষণ পর্যন্ত কেবিন খালি থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই কার্যক্রম চালু থাকবে।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকা-বরিশাল নৌপথে ২৪টির মতো বেসরকারি লঞ্চ ও রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) পাঁচটি জাহাজ ও স্টিমার চলাচল করে। তবে এবারের ঈদে যাত্রীদের চাপের ওপর নির্ভর করবে ঈদের বিশেষ সার্ভিসের আওতায় লঞ্চের সংখ্যা কত হবে।
ভিড় নেই বাসেও
অপর দিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাসমালিক-শ্রমিকদের বাড়তি কোনো প্রস্তুতি এখনো নিতে দেখা যায়নি। বাস মালিক সমিতির নেতারা বলেন, ঈদযাত্রায় বিগত দিনের মতো এবার যাত্রীদের চাপ বেশি না থাকায় ঈদের বিশেষ সার্ভিসে বাড়তি বাস সংযুক্ত করার পরিকল্পনা এখনো নেই।
বাসমালিক ও শ্রমিকেরা জানান, প্রতিবছর মানুষ যেভাবে ঈদুল আজহার আগে রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরত বা বরিশাল নগর থেকে নিজ গ্রামে ফিরত, এবার তেমন প্রবণতা এখনো দেখা যাচ্ছে না। আবার কয়েক মাস ধরে গণপরিবহন বিশেষ করে বাসে যাত্রীদের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। তাঁদের ধারণা, করোনার কারণে কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় আগেভাগেই অনেক মানুষ গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছেন।
নথুল্লাবাদ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাসরেক বলেন, ‘দূরপাল্লার বাস কোম্পানিগুলো অনলাইনে টিকিট বিক্রি করছে। কিন্তু বরিশালের অভ্যন্তরীণ পথগুলোতেও এবার আমাদের তেমন কোনো আয়োজন নেই। যাত্রীদের আগ্রহ কম থাকায় ঈদুল আজহায় আমাদের কোনো ব্যস্ততাও নেই। এখন যেভাবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চলছে, ঈদেও সেভাবেই চলবে।’ তিনি আরও বলেন, আগে ২০ মিনিট পরপর একটি গাড়ি যাত্রীতে ভরে যেত, এখন সেই বাস নিচ্ছে অর্ধেক যাত্রী। এখন এক ঘণ্টায়ও বাসে সেই অর্ধেক যাত্রীই উঠছে না।