খবব৭১ঃ এখনও দেশের ১৭ জেলায় বন্যা চলছে। দেশের উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের এসব জেলায় অবশ্য বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা স্থানভেদে পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) এ তথ্য জানিয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। সামনে ঈদ। কিন্তু পরিবারের জন্য আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। এখন চলছে অস্তিত্বের লড়াই, টিকে থাকার লড়াই। এসব মানুষ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বন্যাদুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া লোকজনের মধ্যে পানিবাহিত রোগবালাই দেখা দিয়েছে।
বন্যাকবলিত জেলাগুলো হচ্ছে- দেশের পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ, উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জ। এ অঞ্চলের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টায় উন্নতি হতে পারে। এছাড়া মধ্যাঞ্চলের জেলা মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী শরীয়তপুর ও ঢাকায় বন্যা চলছে। রোববার নতুন করে বন্যাকবলিত হয়েছে মেঘনাপারের জেলা চাঁদপুর। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এসব জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। এফএফডব্লিউসি জানিয়েছে, এই মুহূর্তে দেশের ১৩টি নদী অন্তত ২১ স্থানে বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- ধরলা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, গুড়, আত্রাই, ধলেশ্বরী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, কালিগঙ্গা, পদ্মা, সুরমা, পুরাতন সুরমা ও মেঘনা। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীগুলোর পানি নেমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীগুলোর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই নদীর পানি কমতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে।
এদিকে দেশের ভেতরে-বাইরে বৃষ্টির প্রবণতা ফের বেড়েছে। বাংলাদেশে বন্যার প্রধান কারণ উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের পানি। গত ২৪ ঘণ্টা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ২২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আসামের ধুবরিতে ১৪৩ মিলিমিটার এবং অরুণাচলের পাসিঘাটে ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। যুগান্তর ব্যুরো, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
কুড়িগ্রাম ও চিলমারী : কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সাড়ে ৩ লাখ বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র, রাস্তা ও বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলের কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীতে ১৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে দুধকুমরে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার এবং ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে রোববার বিকালে প্রবাহিত হয়। রোববার সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে কমপক্ষে ২ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠে পড়ায় শহরের আশপাশের বেশকিছু পরিবার কেসি সড়ক ও রেললাইনে আশ্রয় নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে। রোববার কুড়িগ্রাম পৌরসভার সর্বত্র ছিল বন্যার প্রভাব। ভারি বৃষ্টিপাত এবং নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরময় ছিল জলজট।
গাইবান্ধা : ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও তিস্তা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এতে তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার সকাল ৯টা থেকে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি নতুন করে বাড়ছে। বিকাল ৩টা পর্যন্ত তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়েছে ৪ সেমি. এবং ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বেড়েছে ৩ সেমি.। এতে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮৩ সেমি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ৫৬ সেমি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অপরদিকে তিস্তা নদীর পানি শনিবার সকাল ৬টা থেকেই বাড়ছে। রোববার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৩৩ ঘণ্টায় তিস্তার পানি বেড়েছে ২০ সেমি.। তবে এখনও এ নদীর পানি বিপদসীমার কিছুটা নিচে রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যায় নদী ভাঙনে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
কাউনিয়া (রংপুর) : শনিবার রাত থেকে টানা প্রবল বৃষ্টিতে কাউনিয়ায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলার ঢুসমারা, বিশ্বনাথসহ বেশ কয়েকটি গ্রামসহ হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে আছে বন্যাদুর্গত মানুষ। এছাড়া বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় উঁচু এলাকার বিশেষ করে শহর এলাকার শত শত পরিবার জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) : দেওয়ানগঞ্জে ৩য় বারের মতো আবারও বন্যা শুরু হয়েছে। যমুনা নদীতে তিন দিন ধরে পানি কমতে ছিল। রোববার দুপুর থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করেছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরিষদ চত্বর, জিল বাংলা চিনিকল, সহকারী কমিশনারের কার্যালয়, ভূমি অফিস জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীতে তিন দিন ধরে পানি কমেছে। তারপরও ৪ সেমি. পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৬ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হওয়ায় বানভাসি মানুষের কষ্ট বেড়েছে।
নবাবগঞ্জ (ঢাকা) : ঢাকার দোহার উপজেলায় পদ্মার পানিতে প্লাবিত মাহমুদপুর, সুতারপাড়া, মুকসুদপুর ইউনিয়নে রোববার উপজেলা প্রশাসন প্রায় ১৮৫০টি পরিবারের মাঝে ভিজিএফের চাল ও ১৬শ’ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেছে। চলমান মৌসুমে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১৪টি গ্রাম পানিতে ডুবে যায়। রোববার দিনব্যাপী দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন, পানিতে ডুবে যাওয়া এসব এলাকা পরিদর্শন করেন ও সাধারণ মানুষের খোঁজখবর নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ মাহমুদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র।
শেরপুর : ২৪ ঘণ্টায় শেরপুর ব্রহ্মপুত্র সেতুর কাছে আরও ৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শেরপুরের চরাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরনো ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবলবেগে পানি প্রবেশ করায় শেরপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চলের চরপক্ষীমারী, কামারেরচর, চরমোচারিয়া, বলাইরচর বেতমারী-ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পোড়া দোকান ও শিমুলতলী ডাইভারশনের ওপর দিয়ে প্রবলবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
টাঙ্গাইল ও নাগরপুর : টাঙ্গাইলের যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি সাধারণ মানুষের। পানি কমতে শুরু করায় ভাঙনের আশঙ্কা করেছে বানভাসি মানুষ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার, জিআরের চাল ও নগদ অর্থ বিতরণ করলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। টাঙ্গাইলের ছয়টি উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের ১৯৬ গ্রামের প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় ৬৬১টি বাড়ি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি আট সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দ্বিতীয় দফায় যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বাড়ায় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।
ফরিদপুর : ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে বর্ধিত পৌরসভার কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রোববার সকালে বাঁধের প্রায় ২০ মিটার পাকা রাস্তা পানির তোড়ে ভেঙে যায়। এদিকে পদ্মার পানি বিপদসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া বন্যায় ফরিদপুর সদরের নিম্নাঞ্চল, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার শতাধিক গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। বন্যার্ত মানুষরা বেড়িবাঁধ ও উঁচু স্থানে তাদের গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৫টি শেল্টার হোম প্রস্তুত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, শনিবার বিকাল থেকে শহর রক্ষা বাঁধের বেশ কয়েকটি জায়গায় ছোট গর্ত হয়ে হালকাভাবে পানি বের হতে থাকে। সেই রাতেই পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালায়। কিন্তু পানির চাপ বেশি থাকায় রোববার সকালে সাদিপুর এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের একটি অংশ ভেঙে বর্ধিত পৌরসভার কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
শরীয়তপুর : উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি নেমে আসায় শরীয়তপুরের প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। ফলে বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন কাজ চলছে। সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। শরীয়তপুর সদর, নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। এ ৩টি উপজেলায় অন্তত ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।
সিলেট ও ফেঞ্চুগঞ্জ : সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৭৪নং গেজ স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে বন্যার কারণে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী ও হাকালুকি হাওর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। উপজেলার প্রায় দশ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) : কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়ায় খানিকটা আশার সঞ্চার হয়েছিল বানভাসিদের মাঝে। কিন্তু সপ্তাহকালের ব্যবধানে শনিবার বিকাল থেকে আবারও ধমকা হাওয়াসহ টানা ভারি বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয়ে টানা বৃষ্টিপাতে উজানে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে হু-হু করে পানি বাড়ছে। তৃতীয় দফা বন্যার অশনি সংকেতে স্বস্তিতে নেই বানভাসিরা। সীমান্ত ঘেঁষা বগুলা, সুরমা, লক্ষ্মীপুর, বাংলাবাজার ও নরসিংপুর ইউনিয়নসহ নিম্নাঞ্চলে হু-হু করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে জনজীবনে।