ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ডাক্তারি না পড়েই মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি রাতারাতি হয়ে গেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চেম্বার খুলে রীতিমতো চিকিৎসা দিচ্ছিলেন জটিল সব রোগের। চমকপ্রদ ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে প্রতারণা করছিলেন চিকিৎসা নিতে আসা গরীব-অসহায় রোগীদের। কিন্তু তার এ প্রতারণা আর বেশিদুর অগ্রসর হতে পারলো না, ধরা খেলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে। আদালতকে দেখাতে পারেননি কোন বৈধ কাগজপত্র।
অবশেষে নিজ মুখে নিজের সকল দোষ স্বীকার করায় আদালত তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বড় খোচাবাড়ী হাট নামক এলাকায়। দন্ডপ্রাপ্ত চিকিৎসক মোঃ সোহাগ ইসলাম বাবু (২০) সদর উপজেলার কিসমত দৌলতপুর এলাকার মৃত-খলিলুর রহমান এর ছেলে।
জানা যায়, বেশকিছু দিন ধরে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বড়খোচাবাড়ী এলাকায় বিশাল সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিজেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করে এলাকার গরীব-অসহায় মানুষদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন কথিত ডাঃ মোঃ সোহাগ ইসলাম বাবু।
বিষয়টি জানতে পেরে আজ শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন।
এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জেরার মুৃখে কথিত ডাক্তার বাবু নিজের সকল দোষ স্বীকার করে বলেন, তার ভিজিটিং কার্ডে উল্লেখ করা ডিপ্লোমা ডাক্তারও লেখা থাকলেও তিনি ডিপ্লোমাধারী নন। এমনকি তার উল্লেখ করা ডিগ্রিগুলো পল্লী চিকিৎসকের,তাছাড়া তিনি ডিএমএফ ডিগ্রি করেন নি এবং তার নেই কোন ডিগ্রির সার্টিফিকেট।
এসময় নির্বাহী অফিসার তার ব্যাগ চেক করলে বেড়িয়ে আসে আরও ভয়ানক তথ্য। তার ব্যাগ থেকে বের হয় রোগীর প্রেসক্রিপসনের সেট (কোন রোগ হলে কোন ওষুধ দেওয়া হবে)। সেখানে রোগের লক্ষণ বিবরণ সহ কি ঔষধ দেয়া হবে তার তালিকা লিখা রয়েছে। এই তালিকা তিনি যে ডাক্তারের কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ করেছেন তার করে দেওয়া এবং সে মোতাবেক তিনি রোগীদের চিকিৎসা দিতেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, বড় ধরণের কোন অঘটন ঘটার আগেই আমরা অপরাধীকে ধরতে পেরেছি। অপরাধী তার সব দোষ স্বীকার করায় তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।জনস্বার্থে এ ধরণের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।