মধ্যাঞ্চলে বন্যার আরও অবনতি

0
397
ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার বাড়ছে বগুড়ায় যমুনার পানি
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। এ দুই অঞ্চল থেকে নেমে আসা পানি চাপ সৃষ্টি করছে মধ্যাঞ্চলে। এতে এ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চল একের পর এক প্লাবিত হচ্ছে। সর্বশেষ বন্যাকবলিত হয়েছে শরীয়তপুর। এছাড়া মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকা জেলা বন্যাকবলিত। বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল। এগুলোর মধ্যে শেষের দশটি জেলায় বন্যার পানি নামছে। কিন্তু অবনতি হচ্ছে প্রথম ৭ জেলার পরিস্থিতি।

করোনায় শ্রমজীবী মানুষের হাতে কোনো কাজ নেই। এর ওপর বন্যার ছোবলে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে পানি ওঠায় বাঁশের মাচার ওপর অনেকে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ গবাদিপশু সরিয়ে নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিলেও অধিকাংশই বাড়ির গবাদিপশু পানিতেই রয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পানিতে থাকলে এসব পশুর পায়ে ঘা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। দেখা দিয়েছে গোখাদ্য সংকট। গো-মহিষ, ছাগল পানির দামে বিক্রি হওয়ায় আসন্ন ঈদের খুশি নেই বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের। বন্যার পানিতে হরিরামপুর-মানিকগঞ্জ সড়কের পাটগ্রাম অংশ প্লাবিত হওয়ায় পানির তোড়ে সড়ক ধসে যাওয়ায় মানিকগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) শুক্রবার এক বুলেটিনে জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস পাচ্ছে। স্থিতিশীল আছে যমুনার পানি। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা উভয় নদীর পানি অব্যাহতভাবে হ্রাস পেতে পারে। কুশিয়ারা বাদে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি হ্রাস পাচ্ছে। এ ধারা আরও ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। আসাম-মেঘালয়, সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের একটি অংশে বৃষ্টির প্রবণতা কমে যাওয়ায় এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ধরে গঙ্গা-পদ্মার পানির সমতল বাড়তে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদী সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এফএফডব্লিউসি দেশের ১০১ স্থানে নদীগুলোর পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে থাকে। এগুলোর মধ্যে ৪৪ স্থানে ২৪ ঘণ্টায় পানির সমতল বেড়েছে। ২২ স্থানে ১৪টি নদীই বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীগুলো হচ্ছে- ধরলা, ঘাগট, করতোয়া, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, গুড়, আত্রাই, ধলেশ্বরী, পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা ও পুরাতন সুরমা।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, দেশের ভেতরে ও বাইরে ভারি বৃষ্টির প্রবণতা কমেছে। বিশেষ করে দেশের ভেতরে বড় আকারের বৃষ্টির রেকর্ড নেই। দেশের বাইরে অরুনাচলের পাসিঘাটে ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড করা হয়েছে ৩২ মিলিমিটার। এ দুই প্রদেশের পানি সাধারণত ব্রহ্মপুত্রে প্রবাহিত হয়।

স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ফরিদপুর ও চরভদ্রাসনঃ ফরিদপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ২য় দফায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, চরমাধদিয়া, ডিক্রিরচর ও আলিয়াবাদ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি রাস্তা তলিয়ে গেছে। জেলায় আগাম বন্যার পানি প্রবেশ করায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোপা আমন, বোরো ধান এবং সবজিক্ষেত। ফলে জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাড়াও সদরপুর ও চরভদ্রাসন, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও কয়েকটি গ্রাম। এই চারটি উপজেলার ৩৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত অসহায় ৪ শতাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে বানভাসি ৪ শতাধিক পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। চরভদ্রাসনে ৮০টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)ঃ অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে যমুনার পানি। এতে সৃষ্ট বন্যায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। ভূঞাপুর পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চলসহ গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী নিকরাই, অলোয়া ও ফলদা ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙন হুমকির মুখে রয়েছে ভূঞাপুর তারাকান্দি সড়ক। এদিকে ৩ দিনের অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের বিভিন্ন স্থানে লিকেজ দেখা দিয়েছে। এসব লিকেজ মেরামতে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ)ঃ পদ্মায় শুক্রবার বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় লৌহজং উপজেলার নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৯টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি মাছের ঘেরগুলোতে প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছে লৌহজং উপজেলার শতাধিক মাছচাষী। অপরদিকে পদ্মায় তীব্র স্রোত আর ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে দ্বিগুণ।

রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া গেজ পয়েন্ট স্টেশনে দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধির কারণে ইউনিয়নের মজিদ শেখেরপাড়া ও সাহাদত মেম্বারের পাড়ায় পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে দুই গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

শেরপুরঃ শেরপুরে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়েই চলেছে। ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র সেতুর কাছে ৩৯ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরনো ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের দশটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে সবজিক্ষেত, বীজতলা ও পাটক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পোড়া দোকান ও শিমুলতলী ডাইভারসনের ওপর দিয়ে প্রবলবেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে ওই আঞ্চলিক মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়েছে।

সরিষাবাড়ী ও দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর)ঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ৫টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও পৌর এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। ইউনিয়নগুলো হল- সাতপোয়া, পোগলদিঘা, আওনা, পিংনা ও কামরাবাদ। সরিষাবাড়ী যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি সুবর্ণখালী, ঝারকাটা ও ঝিনাই নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পৌর এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাদ্য গুদাম, থানা, সমাজসেবা অফিস, মহিলাবিষয়ক অফিস, বাসস্ট্যান্ড ও ২টি বাজারসহ প্রধান সড়ক বন্যার পানিতে সয়লাব হয়েছে। এছাড়া বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সরিষাবাড়ী রেলস্টেশনের রেললাইন। দেওয়ানগঞ্জ যমুনা নদীর পানি কমলেও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে পৌর এলাকাসহ আটটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হাসান বলেন, দেওয়ানগঞ্জ পৌর এলাকাসহ নয়টি ইউনিয়নে আটান্ন হাজার পরিবারের জন্য ৫৭০ মে. টন ভিজিএফ বরাদ্দ করা হয়েছে।

রাজশাহীঃ রাজশাহীর বাগমারায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিতে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। বন্যার পানি বিভিন্ন নদ-নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে বিভিন্ন গ্রাম। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নওগাঁর মান্দা উপজেলার শিবনদীর টেংরা নামক স্থানের বাঁধ কেটে দেয়ায় বাগমারায় বন্যার পানি সরাসরি প্রবেশ করেছে।

কুড়িগ্রাম ও চিলমারীঃ কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি কিছুটা কমলেও এখনও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার, দুধকুমর নদীর পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। চিলমারীতে বন্যা পরিস্থিতিতে নদীর পানি হ্রাস পেলেও বাঁধের ভেতরে ঢুকে পড়া পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ ও থানাসহ গোটা উপজেলা শহর। বানভাসিদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার, গোখাদ্য ও স্যানিটেশনের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও রানীগঞ্জ, থানাহাট ও রমনা ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় ৬-৮ ইঞ্চি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে সামান্য ত্রাণের বরাদ্দ এলেও তা এখনও বানভাসিদের মাঝে বিতরণ করা হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কোহিনুর রহমান বলেন, পরশু বন্যার্তদের জন্য ১২ মে. টন চাল, শিশু খাদ্যের জন্য ১৫ হাজার টাকা ও গোখাদ্য ১৫ হাজার টাকাসহ মোট ৬০ হাজার টাকা এবং বৃহস্পতিবার ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে। জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, বন্যা প্লাবিত এলাকায় প্রয়োজন অনুযায়ী শুকনো খাবার, শিশু ও গোখাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)ঃ সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে সুরমাসহ সব নদীনালা, খাল-বিল, হাওর, মাঠ ও রাস্তাঘাট থেকে পানি নামছে শম্বুক গতিতে। এতে বন্যার্ত পরিবার-পরিজন ও জীর্ণশীর্ণ গবাদিপশু নিয়ে অসহনীয়ভাবে দিন কাটছে বানভাসিদের। কেননা উপর্যুপরি দু’দফা বন্যায় লণ্ডভণ্ড হয়েছে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের কাঁচা-পাকা রাস্তা, কাঁচা ঘরবাড়ি, হাজার হাজার হেক্টর উঠতি আউশ, রোপা আমনসহ আগামী মৌসুমি ফসলের বীজতলা ও রবিশস্য।

মানিকগঞ্জঃ মানিকগঞ্জে যমুনা ও পদ্মার পানি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। জেলার দৌলতপুর, হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। সর্বশেষ শুক্রবার যমুনা নদীর পানি শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ও হরিরামপুরে পদ্মার পানি ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) ফারুক আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বন্যার পানিতে হরিরামপুর-মানিকগঞ্জ সড়কের পাটগ্রাম অংশ প্লাবিত হওয়ায় পানির তোড়ে সড়ক ধসে যাওয়ায় মানিকগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে বন্যার পানি অব্যাহত বৃদ্ধিতে জেলা সদর, ঘিওর ও সাটুরিয়া উপজেলায় ফসলি জমিতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে আউশ, আমন, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ)ঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনাসহ সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে এ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। দ্বিতীয় দফা বন্যায় উপজেলার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডেও রূপপুর নতুনপাড়ার চর ও নিচু এলাকার প্রায় ২ শতাধিক হতদরিদ্র তাঁত শ্রমিকের বাড়িঘর ও তাঁত কারখানা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।

নবাবগঞ্জ (ঢাকা)ঃ দোহারে পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে মাহমুদপুর, বিলাসপুর, নারিশা, নয়াবাড়ীসহ নবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এসব এলাকার ৫ হাজারের অধিক পানিবন্দি পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মিনি কক্সবাজারখ্যাত মৈনট ঘাট এলাকাটি পদ্মার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায়, এ পর্যটন এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দোহার উপজেলার ধোয়াইর বাজারসহ পূর্ব ও পশ্চিম ধোয়াইর গ্রামের বেশির ভাগ এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নারিশা ইউনিয়নের মেঘুলা বাজার, বিলাসপুরের মধুরচর, রানীপুর, কৃষ্ণদেবপুর, রাধানগর, মাহমুদপুরের নারায়ণপুর, হরিচণ্ডি ও মুকসুদপুরের পদ্মাতীরবর্তী অঞ্চলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে ৫ হাজারের অধিক পরিবারের জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। এসব অঞ্চলের মানুষ ঈদ উদযাপনের বদলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম ফিরোজ মাহমুদ বলেন, দোহারে পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। খুব দ্রুত তাদের কাছে সরকারি সহায়তা পৌঁছানো হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here