খবর৭১ঃ
রিজেন্ট ও জেকেজির মতো কোভিড-১৯ রোগীদের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তার নাম রাজিব মিয়া।
রোগীদের ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে অধিদফতরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দু-তিন দিন আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল তাকে নিয়ে গিয়েছিল।
রাজিব সম্প্রতি বিশেষ বিবেচনায় অধিদফতরে নিয়োগ পেয়েছেন। এর আগে তিনি আইইডিসিআরে অস্থায়ী ভিত্তিতে নমুনা সংগ্রহের কাজ করতেন। সেখানে তিনি রোগীদের নমুনা সংগ্রহের সময় টাকা নেয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ১০টি পৃথক টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যসচিব ডা. রেজওয়ানুল হক শামীম বলেন, রাজিব নামে টেকনোলজিস্ট অপরাধ করেছে। তার বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অধিদফতরের সহকারী পরিচালককে (আইন) সভাপতি করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ শুরু করেছে। তাদের রিপোর্ট এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি রাজধানীর ধানমণ্ডির একটি বাসার ৫-৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন রাজিব। এরপর নমুনাগুলো অধিদফতরে জমা দেন। অধিদফতর থেকে নমুনাগুলো আইইডিসিআরে পাঠানো হয়।
কয়েকদিন পর ওই পরিবারের একজন ছাড়া বাকিদের নমুনা পরীক্ষার ফল আইইডিসিআর থেকে পাঠানো হয়। পরিবারের এক সদস্যের ফল না পেয়ে তারা রাজিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রাজিব নিজে থেকে একটি ফল তৈরি করে নিজের ই-মেইল থেকে পাঠিয়ে দেন।
পরবর্তী সময়ে আইইডিসিআর থেকে ফল পাঠানো হলে দেখা যায়, নির্দিষ্ট ব্যক্তির শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ নেগেটিভ। অথচ রাজিবের পাঠানো ফলে লেখা পজিটিভ।
আইইডিসিআর থেকে ফল পাওয়ার পর ওই পরিবারের পক্ষ থেকে রাজিবের পাঠানো ফলের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আনা হয়। আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষা করে দেখেন রাজিবের ফলটি ভিত্তিহীন। তারা বিষয়টি অধিদফতরের নজরে আনে।
এর পরই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
আইইডিসিআর ও অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজিব মিয়া সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত ১৪৫ জনের একজন। অধিদফতরের নিয়োগ তালিকায় যার নাম ছিল ১৯ নম্বরে। নিয়োগের জন্য অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)-এর তালিকায় তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।
নিয়োগের পর তার পদায়ন হয় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে নিয়োগের পরও তাকে সংযুক্তিতে অধিদফতরে রেখে কোভিড রোগীদের নমুনা সংগ্রহে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এর আগে বিপ্রজিত তালুকদার নামের আইইডিসিআরের অপর এর টেকনোলজিস্টের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ ওঠে। তখন আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করে পুলিশে সোপর্দ করে।