খবর৭১ঃ
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, করোনার সংক্রামক আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেনের বিন্যাসে এমন একটা বদল দেখা যাচ্ছে, যার ফলে এই ভাইরাস আরও সংক্রামক হয়ে উঠছে।
যুক্তরাষ্ট্রের লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির ভাইরোলজিস্টদের গবেষণা রিপোর্টটি ‘সেল’ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, করোনার জিনের বদল সামান্য অংশেই হচ্ছে। কিন্তু এর প্রভাব মারাত্মক। জিনের গঠন বিন্যাসের এই বদল বা জেনেটিক মিউটেশন হচ্ছে মূলত করোনার স্কাইক গ্লাইকোপ্রোটিনে।
এই স্কাইক প্রোটিনই মানুষের শরীরের দেহকোষে ঢোকার চাবিকাঠি। কাজেই এই অংশে জিনের গঠন বদলে স্কাইকের ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তুলছে করোনা।
লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বায়োলজিস্ট বেটে করবার বলেন, জিনের গঠন বদলের কারণেই বিশ্বজুড়ে আরও সংক্রামক হয়ে উঠেছে ভাইরাসটি।
জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অনলাইন কনফারেন্সে করোনার জেনেটিক মিউটেশন নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছিলেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিজের ডিরেক্টর ও হোয়াইট হাউসের মুখ্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফৌজি।
তিনি বলেন, সিঙ্গল মিউটেশন হচ্ছে জিনের গঠনে। অর্থাৎ জিন বা ডিএনএ’র যে সম্পূর্ণ বিন্যাস সেখানে একটা নির্দিষ্ট অ্যামাইনো এসিডের কোডে বদল হচ্ছে।
সার্স-কভ-২ ভাইরাস এমনভাবে সেই অ্যামাইনো এসিডের কোড বদলে দিচ্ছে যাতে তার বিভাজন আরও দ্রুতগতিতে হয়। আর বিভাজনের ফলে তৈরি নতুন স্ট্রেন আরও বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠে এবং অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সাড়ে সাত হাজার করোনা রোগীর নমুনা থেকে ভাইরাল স্ট্রেন আলাদা করে খুঁটিয়ে তাদের কার্যকলাপ দেখে ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের (ইউসিএল) বিজ্ঞানীরা বলেছেন, খুব দ্রুত জিনের গঠন বদলাচ্ছে ভাইরাস। এই বদলটা হচ্ছে পরপর, একসঙ্গে।
একটা ভাইরাসের জিনোম (ভাইরাল জিন) থেকে তৈরি হচ্ছে আরেকটা, তার থেকে আরেকটা এই প্রক্রিয়া চলছেই।
আর আশ্চর্যের ব্যাপার হল, প্রতিটি জিনোমই একে অপরের থেকে আলাদা। কারণ প্রতিবারই প্রতিলিপি বা নিজের মতোই আরও একটিকে তৈরি করার সময় জিনের গঠন বদলে ফেলেছে ভাইরাস।
গবেষকদের দাবি, একসঙ্গে ২০০ বার জিনের গঠন বদলাতে দেখা গেছে এই ভাইরাসকে। প্রতিটা বদলেই এটি হয়ে উঠেছে আরও সংক্রামক।