খবর৭১ঃ
আব্দুল আওয়াল, মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ গত কয়েক দিনে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মগড়া ও ধনু নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মদনের গোবিন্দশ্রী গুচ্ছ গ্রামের ৫০ পরিবারসহ উপজেলার ৫ ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার গৃহ বন্দী হয়ে পড়েছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সবজি চাষ, আমন বীজতলা, পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় চাষীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে আমনচাষীরা পড়েছে বিপাকে। তাদের বীজতলা তলিয়ে গেছে এবং যারা বীজতলা তৈরি করার চেষ্টা করছিল তাদেরও গ্যাজানো ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমন চাষ নিয়ে উদ্ভিগ্নে রয়েছেন এলাকার চাষীরা। উপজেলার মাঘান, গোবিন্দশ্রী , মদন, তিয়শ্রী ও ফতেপুর ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চালে শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। প্রতিদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এ সব এলাকার লোকজন বন্যার আতংকে রয়েছে। গোবিন্দশ্রী গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদ উল্লাহ, বাবুল, সাত্তার, রহিম জানান গতকাল শনিবার আমাদের গুচ্ছ গ্রামে ঘরের ভিতর পানি প্রবেশ করায় অনেক পরিবার পাশের গ্রামে চলে গেছে। বাকিরা ঘরের ভিতর ঝুঁকি নিয়ে ঘুমানোর জায়াগা উচুঁ করে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেলেও এ পর্যন্ত কেউ দেখতে আসেনি। কোন সরকারি সাহায্য মিলেনি।
মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ শফিকুল ইসলাম নয়ন ও ফতেপুর গ্রামের মৎস্যচাষী আসদ মিল্কী , বাঘমারা গ্রামের আনা মিয়া, পৌরসভার আল মাহবোব আলম জানান হঠাৎ করে পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় মৎসচাষের পুকুর গুলো ডুবে মাছ ভেসে গেছে। এতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমনচাষী ফতেপুর গ্রামের ইঞ্জিল খান, বাঘমারা গ্রামের বাবুল মিয়া, মদন গ্রামের আরব আলী জানান, আমাদের বীজ তলায় পানি প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে। আবার যারা বীজতলা তৈরি করার চেষ্টা করছিল তাদেরও গ্যাজানো ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আগামী আমন মৌসুমে চারার সংকটে আমরা উদ্ধিগ্নে আছি। উপজেলা কৃষি অফিসার নাজমূল হাসান জানান, এলাকায় হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার নিচু এলাকার শাকসবজি ও বীজতলা তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এ নিয়ে মাঠ কর্মীদের সাথে সভা হচ্ছে। অচিরেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যাবে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, অনেক পুকুরের মাছ বানের পানিতে ভেসে যাওয়ার খবর পাচ্ছি। অচিরেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মদনের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়ে সাথে কিছু শুকনো খাবার নিয়ে আজ রবিবার গোবিন্দশ্রী ও মাঘান ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম পরিদর্শনে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।