ফুঁসে উঠেছে তিস্তাঃ রংপুরের ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি

0
447
ফুঁসে উঠেছে তিস্তাঃ রংপুরের ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়ঙ্কর রূপে গর্জে উঠেছে তিস্তা। নদীতে এখন শুধুই স্রোতের শব্দ। আজ শনিবার সকালে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ৬০ মিটার) ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ শনিবার বিকেল ৩টায় বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তার পানি।

তিস্তায় সৃষ্ট বন্যায় নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়ে নদীপারের পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার নদী কূলবর্তী ৫০ গ্রাম তলিয়ে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার পরিবার। বিশেষ করে চরাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, অবিরাম বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে শুক্রবার থেকে। তিনি জানান, গতকাল শনিবার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর, কাউনিয়া সদরসহ ৮টি চরগ্রাম তলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার ও পীরগাছা উপজেলার ছাওলা, তাম্বুলপুর, দক্ষিণ গাবুরা, চর গাবুরা ও রহমতের চরসহ ১০ গ্রাম তলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গঙ্গাচড়ার বন্যা কবলিত এলাকা গিয়ে দেখা যায়, চরের বাড়িগুলোর চারপাশে শুধু পানি আর পানি। হঠাৎ করে আসা পানিতে বাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা বেগম পানিবন্দি পরিবারগুলোর দুর্ভোগের কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এসব মানুষের জন্য শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন উপকরণ ও ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে আমরা সতর্কাবস্থায় রয়েছি। তিন্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ফলে নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিস্তা ব্যারাজের সবকটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here